গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হামলায় শনিবার ইসরাইরের এক ব্রিগেড কমান্ডার নিহত হয়েছে। নাহাল ইনফ্রেন্ট্রি ব্রিগেডের কর্নেল জোনাথান স্টেইনবার্গ গাজা উপত্যকার কাছে কেরেম শালোম এলাকায় হামাস যোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জোনাথন (৪২) যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার সময় নিহত হয়েছেন।
শনিবারের যুদ্ধে নিহত ইসরাইলিদের মধ্যে তিনি হলেন সবচেয়ে সিনিয়র ইসরাইলি সামরিক অফিসার। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এত সিনিয়র আর কোনো ইসরাইলি অফিসার নিহত হননি।
ইসরাইলি মিডিয়া শনিবার শুরু হওয়া এই হামলাকে নজিরবিহীন হিসেবে অভিহিত করেছে।
একটি আরবি মিডিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিরা ৫২ জন ইসরাইলিকে বন্দী করেছে। এসব বন্দীর কয়েকজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
হামাস যোদ্ধারা এখনো ইসরাইলের ভেতরে বিভিন্ন এলাকায় লড়াই করে যাচ্ছে। শনিবার ভোরে শুরু হওয়া লড়াইয়ে এ পর্যন্ত তিন শতাধিক ইসরাইলি নিহত হয়েছে। আর গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ২৩২ ফিলিস্তিনি। হামাসের এই হামলায় হতচকিত হয়ে পড়েছে ইসরাইল। হামাস বিপুলসংখ্যক ইসরাইলি সেনাসদস্য ও বেসামরিক নাগরিককে বন্দী করেছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা স্থানীয় সময় শনিবার দিবাগত রাত ১.৩০টাতেও (জিএমটি ১০:৩০, বাংলাদেশ সময় ভোর ৪:৩০) লড়াই চলছিল। আর দেশটি তখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
আর গাজাতে ইসরাইল বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপ-প্রধান সালেহ আল-অ্যারোই আল জাজিরাকে বলেছেন, হামাসের হাতে এখন বিপুলসংখ্যক ইসরাইলি বন্দী রয়েছে। বন্দীদের মধ্যে সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাও রয়েছে। তিনি বলেন, ইসরাইলি কারাগারে আটক সকল ফিলিস্তিনিকে মুক্ত করতে এই বন্দীরাই যথেষ্ট।
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক ইসরাইলি সৈন্যকে হত্যা ও বন্দী করতে পেরেছি।’
হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, গাজা থেকে যে হামলা শুরু হয়েছে তা অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং জেরুসালেমেও বিস্তৃত হবে।
তিনি বলেন, ‘এটা হলো আমাদের শত্রুদের, তাদের সৈন্যদের এবং বসতি স্থাপনকারীদের পরাজয়ের এবং বিপর্যয়ের সকাল।’
শনিবার এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে, তা আমাদের প্রস্তুতির শ্রেষ্ঠত্ব। আজ যা ঘটেছে, তা শত্রুদের দুর্বলতার প্রকাশ।’
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপ-প্রধান সালেহ আল-অ্যারোরি আল জাজিরাকে বলেছেন, হামাস বিপুলসংখ্যক ইসরাইলি বন্দীকে আটকে রেখেছে। এদের মধ্যে সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাও রয়েছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার রাতে ঘোষণা করেছেন যে ইসরাইল ‘এই কালো দিনের ভয়াবহ প্রতিশোধ নেবে।’
ইসরাইল ইতোমধ্যেই গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা শুরু করেছে। গাজা সিটির বেশ কয়েকটি ভবন তারা গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী হাজার হাজার রিজার্ভিস্টকে জড়ো করেছে। তারা গাজায় স্থল অভিযান পরিচালনা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল, আল জাজিরা, বিবিসি এবং অন্যান্য
Leave a Reply