যমুনা নদীর নাব্য সঙ্কট দূর করতে এবং তীর সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশকে ১০ কোটি ২০ লাখ ডলার অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক।
জনগণকে বাস্তুচ্যুত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে, তাদের জীবিকা রক্ষা করতে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
এতে আরো বলা হয়, প্রস্তাবিত ধারাবাহিক প্রকল্পগুলোর মধ্যে প্রথম হলো যমুনা নদী টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্প ১-। এটি পর্যাপ্ত গভীরতার সাথে নাব্য বাড়াতে সহায়তা করবে। এর ফলে সারা বছর ধরে বড় কার্গো জাহাজগুলোর স্থান সংকুলান করা সম্ভব হবে।
এটি অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন পুনরায় চালু করতে সহায়তা করবে এবং আঞ্চলিক যোগাযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এতে নদীভাঙন ও বন্যা থেকে প্রায় ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি রক্ষা, স্থানীয় জনগণের জীবিকা ও সম্পদ রক্ষা এবং নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা হবে।
বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, ‘যমুনা পৃথিবীর বৃহত্তম ও গতিশীল নদীগুলোর মধ্যে একটি। নদীটি লাখ লাখ মানুষের জীবিকার সাথে সম্পৃক্ত। তবুও, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানির স্তর বৃদ্ধির কারণে নদী ভাঙন প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে এবং তাদের দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘যমুনা নদীর টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল ব্যবস্থাপনা দেশ ও জনগণের জন্য বিস্তর অর্থনৈতিক সুফল বয়ে আনবে। বিশ্বব্যাংক নদীর তীরের কিছু অংশ রক্ষা এবং নাব্য বাড়ানোর জন্য একটি বহুমুখী কর্মসূচি বিকাশ ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে এবং আমরা আমাদের বহুপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ চালিয়ে যাব।’
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রকল্পটি ফুলছড়ি, গাইবান্ধা ও কালিহাতী অতিক্রম করে যমুনার দু’টি প্রণালীর উদ্ভাবনী নদী কাঠামো ও গতিপথের মাধ্যমে প্রকৃতি নির্ভর সমাধানে পাইলট প্রকল্প করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উন্নত গতিপথ ও নাব্য বাড়লে প্রায় ১ লাখ মানুষ উপকৃত হবে। কারণ এতে যাত্রীরা বাসের পরিবর্তে ফেরি সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও প্রকল্পের টিম লিডার আহমেদ শাওকি বলেন, ‘প্রকল্পটি বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর আওতায় মুখ্য প্রথম বহু-খাতীয় বিনিয়োগ হবে।’
তিনি বলেন, ‘পাইলট কার্যক্রম পরিবেশ রক্ষার সময় জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে সহায়তা করবে এবং নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহে হস্তক্ষেপ করবে না। এই পর্যায় থেকে প্রাপ্ত সাফল্য ও পাঠ পরবর্তী প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে নকশা ও পরিধি সম্পর্কে জানা যাবে।’
প্রকল্পটি যমুনা নদীর তীরে বসবাস করা ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য দুর্যোগ ও বাস্তুচ্যুতির ঝুঁকি হ্রাস করার দিকেও মনোনিবেশ করবে। প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন মানুষকে একটি বিমা প্রকল্পের আওতায় আনা হবে এবং এক তৃতীয়াংশেরও বেশি উপকারভোগী হবেন নারী।
বিমা সক্রিয় হয়ে গেলে বিমার সুবিধাভোগীরা ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় অর্থ পাবেন। এ ছাড়া সম্প্রদায় সুরক্ষা তহবিল থেকে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।
সূত্র :ইউএনবি
Leave a Reply