আমেরিকায় পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ডিপোর্টেশন আতংক বিরাজ করছে। অনেকে দেশে গিয়ে আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারেন নি। জেএফকে থেকে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আর ফেরত পাঠানো অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদের প্রধান সমস্যা আই-২০ জটিলতা। গত ২ বছরে প্রায় বাংলাদেশি ১৭ জন শিক্ষার্থীকে ডিপোর্ট করেছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কেন তারা ডিপোর্ট হচ্ছেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য কেউ দিতে পারছেন না। শুধু বলা হচ্ছে আই-২০ জটিলতা।
বাাংলাদেশ থেকে গত ২ বছরে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন লেখাপড়া করতে। তাদের অধিকাংশই এসেছেন আই-২০ পাবাার পরই।যুক্তরাষ্ট্রের সরকার অনুমোদিত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন কোন বিদেশি ছাত্র/ছাত্রীকে এই বলে সার্টিফিকেট দেয় যে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ফুলটাইম শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হয়েছে এবং তার আর্থিক সামর্থ রয়েছে। যাকে বলা হয়, সার্টিফিকেট অব এলিজিবিলিটি ফর ননইমিগ্রান্ট স্টুডেন্ট স্ট্যাটাস। এই আই-২০ ফরম ডেজিগনেটেড স্কুল অফিসিয়াল (ডিএসও) থেকে শিক্ষার্থীরা পেয়ে থাকেন। আর এটা পাবার পরই তারা সংশ্লিষ্ঠ দেশের আমেরিকান দূতাবাসে ভিসার জন্য ইন্টারভিউ দেন বা দেবার জন্য আবেদন করেন।স্টুডেন্ট ভিসায় নিজ দেশে যাতায়াতেও কোন সমস্যা নেই। কিন্তু রয়েছে কিছু বিধি নিসেধ। তা সর্তকতার সাথে না জেনে দেশে বা ভিন্ন দেশে গিয়ে অনেকেই ঝামেলায় পড়ছ্নে। ডিপোর্ট হচ্ছেন।
যেমন একটি নিদিষ্ট একটি কলেজের ডিএসও থেকে আই-২০ পাবার পর ভিসা পেয়েছেন। কিন্তু আমেরিকায় এসে কলেজ চেঞ্জ করেছেন। এরমধ্যে ৫ মাসের বেশি সময় ব্রেক অব স্টাডি হয়েছে। যাকে বলা হয়, ‘৫ মাস রুলস’। তখন স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ থাকলেও আই-২০ বাতিল হয়ে যায়। এমতাবস্থায় অনেকই দেশে গিয়ে আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারেন নি। আবার নতুন আই-২০ নিয়ে দেশে গিয়ে নতুন করে ভিসার আবেদন করে প্রত্যাখাত হয়েছেন। আই-২০ জটিলতায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন সম্প্রতি নিউইয়র্ক ও ফ্লোরিডাস্থ আশা কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়া ছাত্রছাত্রীরা। এ দুটি কলেজে প্রায় ৪ হাজার বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করতেন। এমনই এক ছাত্র রানা । থাকতেন জামাইকায়। ছিলেন আশা কলেজের ছাত্র। ৫ মাসের বেশি স্টাডি ব্রেক হয় তার। ভর্তি হন এলোডোস কলেজে। সংগ্রহ করেন আই-২০ ফরম। তার স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদও ছিল। অন্য একটি দেশে গিয়ে আবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু ভাগ্য তার সুপ্রসন্ন হয়নি। কাগজপত্রের গরমিল ও ব্যাকগ্রাউন্ড ডিসপিউট পাওয়ায় জেএঅকে থেকেই ডিপোর্ট হয়েছেন রানা। বাংলাদেশি স্টুডেন্ট কমিউনিটি গ্রুপে প্রতিদিনই ডিপোর্টের তথ্য দেয়া হচ্ছে। এতে বাংলাদেশি ননইমিগ্রান্ট ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের আতংক বিরাজ করছে। অনেকেই আতংকগ্রস্থ থাকায় কাগজপত্র বা স্ট্যাটাস থাকলেও বাংলাদেশে সামার ভ্যাকেশন বা পারিবারিক প্রয়োজনে দেশে যেতে চাচ্ছেন না।
Leave a Reply