পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী গতকাল ৯ আগস্ট ছিল পাকিস্তানের পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত ঘোষণার দিন। সেই অনুযায়ী গতকালই দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পার্লামেন্ট বিলুপ্তির প্রয়োজনীয় সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভির কাছে পাঠিয়েছেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল দিনের শেষভাগে জাতীয় পরিষদে বিদায়ী ভাষণ দেন শাহবাজ শরিফ। সেখানে তিনি বলেন, তার ৩৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে গত ১৬ মাস ছিল সবচেয়ে কঠিন সময়। খবর ডন।
শাহবাজ শরিফ তার বক্তব্যে বলেন, আমর ৩৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এর আগে কখনোই এত কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি। কেননা এই সময় অর্থনৈতিক সংকট ছিল মারাত্মক, তেলের দাম ছিল অনেক চড়া এবং রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ছিল নৈমিত্তিক ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে বিরোধী নেতা রাজা রিয়াজের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তার কথায়, আগামীকাল (আজ) আমাদের প্রথম বৈঠক, আমরা ৩ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। শাহবাজ শরিফ আইনপ্রণেতাদের ধন্যবাদ দিয়ে তার বক্তব্য শুরু করেন। শুরুতেই তিনি বলেন, তাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ। পূর্বের সরকারের সমালোচনা করেন শাহবাজ বলেন, ১৬ মাসে আমাদের সরকার বিবিধ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। তার কথায়, আগের সরকারের অকৃতকার্য ও অদূরদর্শিতার দায়ভার আমাদের বহন করতে হয়েছে।
শাহবাজ তার বক্তব্যে বলেন, তার সরকার কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে জেলে পাঠায়নি অথবা বেআইনিভাবে হেনস্তা করেনি। এসব আমাদের কাজ নয়। বিরোধী নেতা ইমরান খানকে উদ্দেশ করে বলেন, আজ যদি কোনো নেতাকে কারাগারে ঢোকানো হয়, এতে আমরা খুশি নই, এবং কিছু লোক যদি এতে মিষ্টিমুখ করে তা হলে এটি ঠিক নয়, এটি ভালো ঐতিহ্য নয়।
অন্যদিকে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের উচ্চকক্ষ বা সিনেট একটি প্রস্তাব পাস করেছে যেখানে নির্বাচন কমিশনকে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। দেশটির সংবিধানের ২২৪ ধারা অনুযায়ী জাতীয় পরিষদ বিলুপ্তির ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আবশ্যকতা রয়েছে।
উল্লেখ্য, জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের আগে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্ট সেই রায়ের আধাঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জনপ্রিয় নেতা ইমরানকে কোণঠাসা করে নির্বাচনের বাইরে রাখতেই নির্বাচনের আগে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply