যুক্তরাষ্ট্র একটি পুনর্বাসন কর্মসূচি দাঁড় করানোর পরিকল্পনা করেছে, যা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশটিতে স্থানান্তরের জন্য সক্ষম করে তুলবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘পুনর্বাসন কর্মসূচি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) সাথে সমন্বয় করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
তিনি বলেন, অন্যান্য দেশও একই ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের সাথে কাজ করছে।
মার্কিন এই রাষ্ট্রদূত বলেন, বিষয়টি নজিরবিহীন বাস্তুচ্যুত সংকটের মুখে শরণার্থী পুনর্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ দিনের নেতৃত্বকে প্রতিফলিত করে।
রাষ্ট্রদূত হাস সম্প্রতি ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব নিয়ে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম লক্ষ্য হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করা এবং মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন সম্ভব না হওয়া পর্যন্ত তাদের আশ্রয় অব্যাহত রাখা।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং বার্মা (মিয়ানমার) থেকে বাংলাদেশে তাদের প্রত্যাবাসনের ছয় বছর পূর্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, এ সময় (ছয় বছরে) তাদের দেশে স্বাগত জানানো ও আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবিশ্বাস্য উদারতা ও সহানুভূতি দেখিয়েছে।
এই অবিশ্বাস্য আতিথেয়তার সমর্থনে রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও এ অঞ্চলের রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মানবিক সহায়তা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, রোহিঙ্গারা শিগগিরই নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ ভূমিতে ফিরে যেতে পারবে।’
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখনও নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের অনুমতি দেয় না।
বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিতে ইচ্ছুক, কিন্তু কিছু বিদেশি সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই মুহূর্তে তাদের প্রত্যাবাসনের সমর্থন করছে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তারা (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) মনে করে, মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সেখানে ফেরত পাঠানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’
মোমেন বলেন, প্রত্যাবাসন শুরু করতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যারা কাজ করছেন তাদের সবার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন রয়েছে বলে তারা মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘বিদেশী সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আমাদের প্রত্যাবাসনের জন্য না যাওয়ার পরামর্শ দেয়।’
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে ইচ্ছুক এবং মিয়ানমার সরকারও তাদের ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক।
মোমেন বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রত্যাবাসন। আমি সবসময় আশাবাদী যে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর তারা আরও উন্নত জীবন পাবে।’
সূত্র : ইউএনবি
Leave a Reply