সব প্রস্তুতি শেষ। আবহাওয়া ও কারিগরি বিষয়গুলো অনুকূলে থাকলে আজ শুক্রবার দুপুরেই চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) চন্দ্রযান-৩। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে তার কাউন্টডাউন। দুপুর ঠিক ২টা ৩৫ মিনিট নাগাদ শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করা হবে।
বিশ্বের মাত্র চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটিতে মহাকাশযান অবতণের চেষ্টায় আছে ভারত। চন্দ্রযান-৩ নামের নতুন মিশনটি; দেশটির তৃতীয় চন্দ্রাভিযান। চন্দ্রযান-৩ শুক্রবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকতা সতীশ দেওয়ান মহকাশকেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে।
চন্দ্রযান-৩ অভিযানটি ভারতের চাঁদের বুকে অবতরণের দ্বিতীয় অভিযান। ২০১৯ সালে দেশটি চন্দ্রযান-২ নামে একটি যান চাঁদে অবতরণের জন্য পাঠিয়েছিল। তবে সেটি চাঁদের ভূপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করতে পারেনি।
এর আগে, ২০০৭ সালে চন্দ্রযান-১ নামের একটি মহাকাশযানকে চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণের জন্য পাঠিয়েছিল নয়াদিল্লি। এক বছর সফলভাবে প্রদক্ষিণের পর ২০০৮ সালে এটিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
জানা গেছে, এই মহাকাশ যানটিতে একটি ল্যান্ডার, প্রোপালসন মডিউল এবং রোভার রয়েছে। এটির লক্ষ্য হলো নিরাপদে চাঁদে অবতরণ করা, তথ্য সংগ্রহ করা এবং চাঁদের গঠন নিয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো। বিশ্বে এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি দেশ— যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন সফলভাবে চাঁদে মহাকাশযান অবতরণ করাতে পেরেছে।
ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদ নিয়ে কাজ করছেন। তাদের লক্ষ্য হলো নতুন মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩-কে চাঁদের অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করানো।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-কে চাঁদের পিঠে নামাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল ইসরো-র চন্দ্রযান-২। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে ভারতের সংস্থা। অতীতের অভিযানে পাঠানো অরবিটরটি এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। তাই এ বারের অভিযানে ইসরো আর কোনো অরবিটার পাঠাবে না চাঁদের কক্ষপথে। চাঁদের মাটিতে নামতে কক্ষপথে থাকা চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারেরই সাহায্য নেবে এ বার চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে যাওয়া ল্যান্ডার আর তার ভিতরে থাকা রোভার। চাঁদের মাটিতে নেমে দু’সপ্তাহ ইসরোর গবেষণা চলবে। এতে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং নাসার সাহায্যও নেওয়া হবে।
খবর: আনন্দবাজার
Leave a Reply