1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন

মহাবিশ্ব তৈরির রহস্য খুঁজবে ‘ইউক্লিড টেলিস্কোপ’

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩

বিজ্ঞানের জগতে সবচেয়ে বড় প্রশ্নগুলোর একটি– এই মহাবিশ্ব কী দিয়ে তৈরি? উত্তর খুঁজতে ইউরোপীয় একটি টেলিস্কোপ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এই মিশনের নাম ইউক্লিড যা দূরবর্তী কোটি কোটি গ্যালাক্সির ছবি তুলে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একটি নিখুঁত ত্রিমাত্রিক বা থ্রিডি ম্যাপ তৈরি করবে। বিজ্ঞানীরা এই ম্যাপের সাহায্যে কথিত ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করবেন।

ধারণা করা হয়, মহাবিশ্বে আমরা যা কিছু দেখি তার সব কিছুর আকার ও বিস্তৃতিকে এই দুটো জিনিসই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তবে গবেষকরা স্বীকার করে নিয়েছেন, এই ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি সম্পর্কে তারা এখনো তেমন কিছুই জানেন না। এর কোনোটি সরাসরি চিহ্নিতও করা যায় না।

এখন এই দুটো বিষয় সম্পর্কে জানতে ইউক্লিডের তৈরি থ্রিডি ম্যাপ ব্যবহার করা হবে। এর সাহায্যে বিজ্ঞানীরা বুঝতে চেষ্টা করবেন ডার্ক এনার্জি ও ডার্ক ম্যাটার মহাবিশ্বের সময় ও স্থানের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে।

যুক্তরাজ্যে ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী অধ্যাপক ইসোবেল হুক বলেন, ‘জ্ঞানের এই অভাবের কারণে আমরা আমাদের উৎস সম্পর্কে আসলেই কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারি না। এই ইউক্লিড মিশন থেকে যা কিছু জানা যাবে সেগুলো এই মহাবিশ্বকে বুঝতে আমাদের সাহায্য করবে।

তিনি আরও বলেন, এই মিশন অনেকটা কোথায় স্থলভূমি আছে তা জানার আগে জাহাজে করে যাত্রা করার মতো। এই গবেষণা থেকে জানার চেষ্টা করবো, আমরা এই মহাবিশ্বের কোথায় অবস্থান করছি, কিভাবে আজকের পর্যায়ে এসেছি এবং বিগ ব্যাং মুহূর্তের পর থেকে কিভাবে অপরূপ সব গ্যালাক্সি তৈরি হলো, কিভাবে তৈরি হলো সৌরজগত এবং জন্ম হলো প্রাণের?

ইউক্লিড টেলিস্কোপটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ১৪০ কোটি ইউরো। স্পেস এক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে করে শনিবার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে এটিকে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে। টেলিস্কোপটি অবস্থান করবে পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। গন্তব্যে গিয়ে পৌঁছাতে এর সময় লাগবে এক মাসের মতো।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর সাহায্যে ফিরে যাওয়া যাবে মহাবিশ্বের এক হাজার বছর আগের ইতিহাসে। পৃথিবীর পাশাপাশি এটিও সূর্যের চারদিকে একই গতিতে প্রদক্ষিণ করবে।

প্রাথমিকভাবে এটি ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসার প্রকল্প হলেও এই মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসারও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে, বিশেষ করে টেলিস্কোপের বিজ্ঞান ও প্রকৌশলগত বিষয়ে।

ইউক্লিড মহাকাশে কী করবে?

আগে পরিচালিত গবেষণা থেকে ধারণা করা হয় মহাবিশ্বে যতো শক্তি আছে তার ৭০ শতাংশ ডার্ক এনার্জি। প্রায় ২৫ শতাংশ ডার্ক ম্যাটার। বাকি পাঁচ শতাংশ নক্ষত্র, তারকা, গ্যাস, ধুলোবালি, গ্রহ ও আমাদের মতো দৃশ্যমান বস্তু। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের রহস্যময় এই ৯৫ শতাংশ জগত সম্পর্কে ধারণা পেতেই ইউক্লিড টেলিস্কোপ ছয় বছর ধরে দুটি গবেষণা পরিচালনা করবে।

এর মধ্যে প্রধান কাজ হবে ডার্ক ম্যাটার কোথায় কিভাবে আছে তার একটি মানচিত্র তৈরি করা। এই বস্তুটি সরাসরি চিহ্নিত করা যায় না। কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দৃশ্যমান প্রভাবের কারণেই মহাবিশ্বে এরকম ম্যাটারের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন।

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, এই ম্যাটারের উপস্থিতি না থাকলে গ্যালাক্সিগুলো তাদের আকৃতি ধরে রাখতে পারতে না। এই শক্তি ‘স্ক্যাফল্ডিং’ হিসেবে কাজ করে। এটি অনেকটা অদৃশ্য আঠার মতো যা মহাবিশ্বকে একত্রিত করে রেখেছে। ধারণা করা হয়, সেটা যা কিছুই হোক না কেন, এটাই ডার্ক ম্যাটার। এখান থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয় না, আলো শুষেও নেয় না, এমনকি এখানে আলো প্রতিফলিতও হয় না।

বস্তুটি সরাসরি দেখা না গেলেও টেলিস্কোপের সাহায্যে জানা সম্ভব এটা কোথায় ও কিভাবে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দূরবর্তী নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে ছুটে আসা আলো বিশ্লেষণ করে এই ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কে ধারণা করা পাওয়া যাবে।

হাবল স্পেস টেলিস্কোপও আকাশের মাত্র দুই বর্গ ডিগ্রি এলাকাজুড়ে প্রথমবারের মতো এই কাজটা করে আলোচিত হয়েছিল। এখন ইউক্লিড টেলিস্কোপ এই কাজটা করবে আকাশের ১৫ হাজার স্কয়ার ডিগ্রি এলাকাজুড়ে। এই কাজটি টেলিস্কোপের যে ভিআইএস ক্যামেরা দিয়ে করা হবে সেটা যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বে তৈরি করা হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের মহাকাশ গবেষণা ল্যাবরেটরির অধ্যাপক মার্ক ক্রপার বলেন, এই ক্যামেরা যে ছবি তুলবে সেটা হবে বিশাল। মাত্র একটি ছবি দেখতেই আপনার ৩০০টির বেশি হাই-ডেফিনিশন টেলিভিশনের প্রয়োজন হবে।

সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com