রাশিয়া দাবি করেছে, ইউক্রেনে পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতের দখল নিয়েছে রুশ সেনারা। তার এই দাবি সঠিক হলে তা হবে গত গ্রীষ্মের পর রুশ বাহিনীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য। কিন্তু ইউক্রেন দাবি করেছে, এখনো তারা শহরটির প্রান্তে কয়েকটি ভবনের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। তবে কয়েকদিন ধরে তারা যে স্বীকারোক্তি দিয়েছে তাতে শহরটি মোটামুটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হয়। পুতিনের নির্দেশে ওই সামরিক আগ্রাসন শুরু হয়। আক্রান্ত দেশটি এবং এর ইউরোপীয় ও পশ্চিমা মিত্ররা একে যুদ্ধ বললেও মস্কো একে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলেই অভিহিত করে আসছে। নিকট প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোয় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সম্ভাব্য সম্প্রসারণে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে এ চিন্তা থেকে দেশের ভবিষ্যতের জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাখমুতে রাশিয়ার হয়ে কয়েক মাস ধরে লড়ে আসছেন রাশিয়ার বেসরকারি সশস্ত্র বাহিনী ওয়াগনারের যোদ্ধারা। ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এতে তার সঙ্গে গ্রুপটির কয়েকজন যোদ্ধাকে দেখা যায়। ভিডিওতে তিনি বাখমুত দখলের দাবি করেন। সংস্থাটির এমন দাবির পর তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।
তবে ওয়াগনারপ্রধানের এই দাবি নাকচ করেছেন ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, শহরটির পরিস্থিতি ‘সংকটপূর্ণ’। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও রাশিয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। জাপানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘এটি দুঃখজনক, একটি ট্র্যাজেডি। কিন্তু আজ বাখমুত শুধু আমাদের হৃদয়ে।’
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় শাখার মুখপাত্র কর্নেল সেরহি চেরেভাতি বলেছেন, তাদের সেনারা এখনো কিছু স্থানের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের কিনারায় সুরক্ষিত অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘শহরটি ধ্বংস হয়ে গেছে। সামরিক ও রাজনৈতিকভাবে এর কোনো গুরুত্ব নেই। আমরা শুধু চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছি, যাতে করে তারা স্থির হতে না পারে এবং ধারণা করতে না পারে কোথায় পাল্টা আক্রমণ হবে।’
Leave a Reply