পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার এবং পরবর্তীতে এ গ্রেফতারকে সুপ্রিম কোর্টের ‘অবৈধ’ ঘোষণা করার বিষয়টি দেশটির সেনাবাহিনীতে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। পাক মিলিটারি মনিটর নামের একটি সামরিক সংবাদমাধ্যমে মঙ্গলবার এমন দাবি করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদর দফতর এবং লাহোরে একজন কমান্ডারের বাড়িতে হামলার বিষয়টি উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর দু’জন জেনারেল।
তারা মূলত ইমরানের খানের গ্রেফতারের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি তারা সেনাপ্রধান অসিম মুনিরকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, যদি ইমরান খানকে গ্রেফতারের জেরে তেহরিক-ই-ইনসাফের কর্মীরা সেনাবাহিনীর ওপর কোনো হামলা চালায়, তাহলে তারা গুলির নির্দেশনা দেবেন না। অডিও ফাঁস, গোয়েন্দা তথ্যসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে প্রকাশ্যে আসার বিষয়টি অস্বাভাবিক ঘটনাই।
সেনাবাহিনীর পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হলেও তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন দেশটির আদালত। এর মাধ্যমে সেনাবাহিনী ইমরানকে দমিয়ে দেয়ার যে পরিকল্পনা করেছিল, সেটি ব্যর্থ করে দিয়েছেন আদালত। আগে সেনাবাহিনীর পক্ষেই অবস্থান নিত পাকিস্তানের আদালত। তবে এবার অন্য রকম চিত্র দেখা গেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে যখন হাইকোর্টে হাজির করা হয় তখন প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনাকে দেখে ভালো লাগছে।’
এ ছাড়া জালমে খলিলজাদ নামে আফগান বংশোদ্ভূত প্রভাবশালী মার্কিন নাগরিক গত ১৩ মে এক টুইটে জানান, সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন অপর দুই জেনারেল। তারা অসিমের পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোতে এখন বলা হচ্ছে, যদি বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট না কাটে তা হলে ‘সামরিক আইন’ ঘোষণা না করে ‘জরুরি অবস্থা’ হয়ত ঘোষণা করা হতে পারে। এর মাধ্যমে শাহবাজ শরিফকে সরিয়ে দিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন এবং অন্তত দুই বছরের জন্য নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হতে পারে।
Leave a Reply