1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন

মালয়েশিয়ানদের অন্যরকম ঈদ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৩

সমুদ্রষ্টিত মালয়েশিয়া যেন বিশ্ববাসীর কাছে বিস্ময়। দেশটির উঁচু নিচু পাম অয়েলের পাহাড়, নয়নাভিরাম গাছগাছালির সৌন্দর্য আর মাটি ও সমুদ্রের মিতালি যেন মালয়েশিয়াকে দিয়েছে এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। মাথা উঁচুকরা পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার আরও বাড়িয়ে দিয়েছে দেশটির স্বক্ষমতা। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৯.৫ মিলিয়ন নাগরিক মুসলিম অনুসারী। শতকরা হিসেবে এটি জনসংখ্যার ৬১.৩ শতাংশ।

মালয়েশিয়ায় ঈদুল ফিতরের দিনটিকে স্থানীয় ভাষায় ‘হারি রায়া’ বলে। দিনটি তারা প্রিয়জন এবং পরিবারের সঙ্গে কাটাতেই বেশি পছন্দ করে। দিনটি উপলক্ষে মালয়েশিয়ায় দুই দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই দিনটিতে ‘মাফ জাহির বাতিন’ অর্থাৎ ‘আমি ক্ষমা চাই’ বলে সকলের কাছে নিজের দোষত্রুটির জন্য ক্ষমা চায় মালয়েশিয়ানরা।

এইদিনটিকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় পালিতা নামে বিশেষ ধরনের কুপি দিয়ে সেজে ওঠে প্রতিটি ঘরে। অন্যান্য দেশের মতো মালয়শিয়ানদের খাবার টেবিল সেজে ওঠে নানান খাবারে।

মালয় ভাষায় ‘ঈদ মুবারাক’ কে বলা হয় ‘সালামাত হারি রায়া’ যার অর্থ ‘রোজা ভাঙগার শুভ ঈদ’ অথবা ‘রোজা ভাঙগার উৎসব’। তাছাড়া তারা ঈদকে ‘হারি রায়া পুয়াচা ঈদুল ফিতরিও বলে। দেশটিতে ঈদের দিন ছেলে-মেয়ে সকলে মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজের পরে ঈদের দিন সবাই ঘরের দুয়ার খুলে অভ্যর্থনা জানায়।

নামাজ শেষে কেটুপাত, লেমাং, রেন্ডাঙ্গের মতো মিষ্টান্ন খেয়ে ঘরের সামনে পেলিতা নামক মোম জ্বালিয়ে ঈদের শোভা বাড়িয়ে তোলে মালয়েশিয়ানরা। আতশবাজির মনোমুগ্ধকর খেলার সঙ্গে প্রায় ২-৩ দিন ধরে ঈদ আয়োজন চলতে থাকে দেশটিতে।

মালয়েশিয়ায় এদিনের একটা বিশেষ অংশ হলো, নামাজের আগে এবং পরে সব বাচ্চাদের হাতে ‘ডুয়েট রায়া’ অর্থাৎ একই মানের ২টি রিঙ্গিত একটি খামে ভরে প্রতিটি বাচ্চাকে দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিটি মালয় স্কুল থেকেও বাচ্চাদের এই ‘ডুয়েট রায়া’ দেওয়া হয়।

মালয় ছেলেরা ঈদের দিন যে ড্রেস পরে, তাকে বলে ‘বাজু মেলাউ’ অর্থাৎ উপরের অংশটা ফতুয়া আর নিচেরটা পায়জামা আর তার উপরে লুঙ্গি। মেয়েরা যে ড্রেস পরে, তাকে বলে ‘বাজু কুরুং’ অর্থাৎ উপরের অংশটা কামিজ আর নিচেরটা স্কার্ট। এদিন প্রায় সব মুসলিম মালয় মেয়েরা মাথায় হিজাব ব্যবহার করে। যেটাকে মালয় ভাষায় ‘টোডং’ বলে। ঈদের দিনসহ সারা বছর মালয় মেয়েদের এর ব্যতিক্রম দেখা যায় না।

অধিকাংশ মালয় ঈদের দিন খাবার পরিবেশন করার ক্ষেত্রে পরিবার, আত্নীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আর প্রতিবেশীর জন্য ‘ওপেন হাউস’ প্রোগ্রাম করে। এদিন সবাই ইচ্ছেমতো সবার বাড়িতে গিয়ে খেতে পারে। ঈদের দিন মালয়েশিয়ানদের সবচেয়ে পরিচিত এবং সবচেয়ে পছন্দনীয় খাবার হচ্ছে ‘কেতুপাত’ অর্থাৎ এক ধরনের আঠাল ভাতের ভর্তা। যা একটা কলাপাতা বর্গাকারে কেটে এর মধ্যে রেখে চারপাশ থেকে মুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ‘কেতুপাত’ ২/৩ ধরনের সস আর তরকারির সঙ্গে খেতে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘লেমাং’ মূলত একটি ছোট ফাঁপা বাঁশের নলে নারকেলের দুধ দিয়ে আঠাল চাল রান্না করে প্রস্তুত করা হয়।

তাছাড়া ঐদিনের একটি বিখ্যাত খাবার হলো ‘নাসি পান্দাং’ অর্থাৎ এই রেসিপিতে ভাতের সঙ্গে নানান ধরনের তরকারি পরিবেশন করা হয়। এছাড়া নানা ধরনের কেক, পেস্ট্রি আর স্নাক্সও তৈরি করে তারা। সেইসঙ্গে থাকে বিভিন্ন রঙ আর বিভিন্ন ফ্লেভারের সিরাপ, যেটাকে মালায় ভাষায় ‘মিনুম’ বলে। যাকে আমরা সফট ড্রিংকস বা কোমল পানীয় রলে থাকি।

বাংলাদেশিদের মতো মালয়েশিয়ানরাও গ্রামে ঈদ করতে যায়। এটা তাদের সংস্কৃতির অংশ। মালয়রা গ্রামের বাড়িতে যাওয়াকে ‘বলে কাম্পুং’ বলে। ‘বলে’ মানে ফিরে যাওয়া আর ‘কাম্পুং’ মানে গ্রাম, অর্থাৎ গ্রামে যেয়ে আত্নীয় স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উৎযাপন করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com