কোভিড-১৯ এর জন্যে দায়ী ভাইরাসটি কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে তা নির্ভর করে এটি কোন ধরনের বস্তুর গায়ে পড়েছে তার ওপর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দরজার শক্ত হাতল, লিফটের বাটন এবং কিচেন ওয়ার্কটপের মতো শক্ত জিনিসের গায়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা টিকে থাকতে পারে। তবে এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে সহায়ক পরিবেশে সব ধরনের করোনাভাইরাস এক সপ্তাহও বেঁচে থাকতে পারে।
তবে কাপড়ের মতো নরম জিনিসের গায়ে এটি এতো লম্বা সময় বেঁচে থাকতে পারে না। ফলে আপনি যে কাপড়টি পরেছেন এবং তাতে যদি ওই ভাইরাসটি থাকে, জামাটি একদিন কিম্বা দুদিন না পরলে সেখানে ভাইরাসটি জীবিত থাকার আর সম্ভাবনা নেই।
মনে রাখতে হবে, কোভিড-১৯ এর ভাইরাসটি লেগে আছে এরকম জিনিসে শুধু স্পর্শ করলেই আপনি আক্রান্ত হবেন না। শুধু স্পর্শ করার পর আপনি যদি হাত দিয়ে মুখ, নাক অথবা চোখ স্পর্শ করেন তাহলেই এই ভাইরাসটি আপনার শরীরে ঢুকে পড়বে। তাই এই ভাইরাসটি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ একটি করণীয় হচ্ছে হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ না করা।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, সার্স ও মার্সের ভাইরাস লোহা, কাঁচ এবং প্লাস্টিকের গায়ে ৯ (নয়) দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আবার কোনো কোনো ভাইরাস ঠাণ্ডা জায়গায় ২৮ দিনও বেঁচে থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথের একজন ভাইরোলজিস্ট নিলৎজে ফান ডোরমালেন তার সহকর্মীদের নিয়ে গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন কোভ-২ বা সার্স ভাইরাস কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। তাতে দেখা গেছে, কাশি দেওয়ার পর থেকে ড্রপলেটের মধ্যে এই ভাইরাসটি তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
ক্ষুদ্র ড্রপলেটে, যার আকার ১ থেকে ৫ মাইক্রোমিটার (মানুষের চুলের ৩০ গুন চিকন) সার্স ভাইরাস কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে কোভ-২ ভাইরাস কার্ডবোর্ডের মতো শক্ত জিনিসের ওপর ২৪ ঘণ্টা আর প্লাস্টিকের জিনিসের গায়ে দুই থেকে তিন দিনও বেঁচে থাকতে পারে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৪৮ জনে। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩০ জন। এদের মধ্যে বর্তমানে ১ লাখ ৪৭ হাজার ১৪৫ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন এবং ৭ হাজার ৩৭৮ জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। ওই দিজন সুস্থ্য হলেও পরবর্তীতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন মারা যায়। শুক্রবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০ জন। সূত্র: বিবিসি
Leave a Reply