1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৩ অপরাহ্ন

সেপা চুক্তি এগিয়ে নিতে নেগোসিয়েশন কমিটি

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) নামে বহুল প্রত্যাশিত চুক্তিটি সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ‘ট্রেড নেগোসিয়েশিং কমিটি’ (টিএনসি) নামে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। সেপা চুক্তিটি দ্রুত সম্পন্ন করা এবং এটি যাতে দেশের জন্য ফলপ্রসূ হয়, সেই লক্ষ্যে কমিটি কাজ করছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে চুক্তিতে কী থাকতে পারে, সেসব সেক্টরভিত্তিক প্রত্যাশা ও সংশয় সম্পর্ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে কমিটিকে বলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের মতামত চেয়ে গত মঙ্গলবার অংশীজনদের চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, সেপা চুক্তি দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারত্বে নতুন মাত্রা যোগ করবে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশীয় মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বা সাফটার অধীনে বাণিজ্য হচ্ছে। এ ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশ ভারতের কাছ থেকে আরও কিছু বাণিজ্য সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ হবে। অর্থাৎ পরিণত হবে উন্নয়নশীল দেশে। তখন বিশ্ববাজারের অনেক সুবিধা আর থাকবে না। সে বিষয়টি সামনে রেখে এখনই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক চুক্তির দিকে নজর দিয়েছে বাংলাদেশ।

সেপাকে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বা ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তবে সেপার ব্যাপ্তি সাধারণ মুক্তবাণিজ্য চুক্তির থেকে আরও অনেক বেশি। পণ্যের মুক্তবাণিজ্যের পাশাপাশি শুল্ক সহযোগিতা এবং মেধাস্বত্ব অধিকারের মতো বিষয়গুলোও সেপার আওতায় পড়বে।

ইতোমধ্যে  চুক্তির প্রস্তুতি হিসেবে একটি যৌথ সমীক্ষা দল তৈরি করা হয়। দুই দেশের বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতার নানা দিক নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করে এ সমীক্ষা দল। এ ছাড়া এই চুক্তির বাণিজ্য সুবিধা, অসুবিধা ও দুর্বলতা চিহ্নিত করার পাশাপাশি দুই  দেশের বাজার সক্ষমতার বিভিন্ন বিষয় নিয়েও গবেষণা চালানো হয়েছে। পরবর্তী ধাপে সমীক্ষার পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে নানা আলোচনা ও সমঝোতা বৈঠকের মধ্য দিয়ে চুক্তির শর্তগুলো প্রণয়নে করেছে দুই দেশ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, এসব শর্তে সংযোজন, বিয়োজন, পরিমার্জন এবং সংশোধনের মধ্য দিয়ে একমত হওয়ার মাধ্যমে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের দিকে এগিয়েছিল বাংলাদেশ-ভারত। তবে চলমান বৈশ্বিক সংকট ও এলডিসি থেকে বাংলাদেশের বেরিয়ে যাওয়াসহ সেপাকে ঘিরে বেশকিছু নতুন চ্যালেঞ্জ আসতে পারে উভয় দেশের সামনে। তাই এই ধারণা থেকে চুক্তির বিষয়টি নিয়ে নতুন করে কাজ করছে দুই দেশ।

এই অবস্থায় নেগোসিয়েশন, আলাপ-আলোচনা এবং প্রয়োজনে আরও সমীক্ষা ও সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করে করে যাতে দ্রুত সেপা চুক্তি করা যায় সে লক্ষ্যেই ‘ট্রেড নেগোশিয়েশিং কমিটি (টিএনসি)’ গঠন করে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে এ কমিটির প্রথম সভাও হয়েছে। সেপা নোগোসিয়েশনকে ফলপ্রসূ করতে ‘ট্রেড ইন গুডস, ট্রেড ইন সার্ভিসেস, ইনভেস্টমেন্ট’সহ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে চুক্তি হতে সেক্টরভিত্তিক প্রত্যাশা ও সংশয় সম্পর্ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ২৭ মার্চ স্ট্রেকহোল্ডারদের চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টদের জরুরি ভিত্তিতে মতামত দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এফটিএ-১ অধিশাখা।

সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সচিবালয়ে জানান, সেপা চুক্তি করার বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত একমত ও এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। এখন দ্রুত চুক্তিটি বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। দ্রুত যাতে সেপা করা যায় আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে বৃহৎ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট-সেপা) হলে উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে। ভারতের ইনস্টিটিউট অব ফরেন ট্রেড (আইআইএফটি) ও বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই) ইতোমধ্যে সেপা চুক্তির ব্যাপারে ইতিবাচক সমীক্ষা প্রতিবেদন করেছে। এতে বলা হয়, চুক্তিটির পর বাংলাদেশে ভারতের অবাধ বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত হবে। পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি সেবা রপ্তানির সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। ভারতের বিশাল বাজারে এই সুবিধায় বাংলাদেশের ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারবে। দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক পৌঁছাবে নতুন মাইলফলকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমান ভারত থেকে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্যসামগ্রী আমদানি হয়, বিপরীতে রপ্তানি হচ্ছে ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্যসামগ্রী। এ অবস্থায় বড় অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে দ্রুত সেপা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বর্তমানে ভারতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো শুল্ক বাধা না থাকলেও, বিভিন্ন ধরনের অশুল্ক বাধা রয়েছে; যার মধ্যে অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি আরোপ, পণ্যের গুণগত মান-সংক্রান্ত সার্টিফিকেশন, বন্দরের অপ্রতুল অবকাঠামো, স্থল ও নৌপথে যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা উল্লেখযোগ্য। এগুলো দূর করা গেলে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com