1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন

নিম্নআয়ের মানুষের মাংস কেনা দায়

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩

রোজা ঘিরে বাজারে সব ধরনের পণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বাড়ানো হয়েছে দাম। সরবরাহ ঠিক থাকলেও ইফতার ও সেহরিতে চাহিদা বাড়ায় প্রতিকেজি গরুর মাংসের দাম ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৭৫০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে মাংস কিনে নিম্নবিত্তের পাতে তোলা যেন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়ায় পণ্যটি কিনতে মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস উঠছে। ইচ্ছা থাকলেও বাজারের তালিকা থেকে অনেকে তা কেনা বাদ দিচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ও নয়াবাজারসহ একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে রোজা শুরুর এক মাস আগেই খুচরা বাজারে কেজিতে ১০০ টাকা বাড়িয়ে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকায়। পাশাপাশি রোজা ঘিরে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ১২০ টাকা বাড়িয়ে ২৬০-২৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছে। তবে চাপের মুখে গত তিন দিনে দাম কমিয়ে ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বৃহস্পতিবারের পণ্য মূল্য তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রোজা ঘিরে গত বছর একই সময়ের তুলনায় প্রতিকেজি গরুর মাংস ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ, খাসির মাংস ১৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ ও ব্রয়লার মুরগি ১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা। যা গত বছর রোজায় ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা। যা আগে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৮০-১৯০ টাকা। যা গত বছর একই সময় ১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কাওরান বাজারে মাংস কিনতে আসা দিনমজুর মো. মকবুল বলেন, বাসায় রোজার শুরু থেকেই ছেলেমেয়েরা গরুর মাংস খেতে চাচ্ছে। কিন্তু তাদের বায়না রাখার সামর্থ্য আমার নেই। কারণ দিনে ৪০০-৫০০ টাকা ইনকাম হয়। সে টাকা দিয়ে ৭৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস কেনা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ছেলেমেয়েদের বুঝিয়ে রাখতে হচ্ছে। বাবা হিসাবে এর চেয়ে আর কষ্টের কিছু নেই।

রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা হুমায়রা বেগম বলেন, গরুর মাংসের যে দাম তাই কেনা সম্ভব নয়। ছেলেমেয়েরা বায়না করেছে সেহরিতে গরুর মাংস খাবে। বাড়তি দামের জন্য কিনতে পারিনি। ব্রয়লার মুরগি নিয়ে বাড়ি ফিরছি। তবে এ পণ্যের দামও গত বছরের তুলনায় অনেক। বাজারে সব আছে, তবে দাম বেশি। রোজা ঘিরে এমনটা করা হয়েছে। দেখার কেউ নেই।

একই বাজারে ব্যবসায়ী মিরাজ বলেন, আগে রোজায় বাজারে এলে ২-৩ কেজি গরুর মাংস কেনা হতো। এবার কেজি ৭৫০ টাকা। তাই এক কেজি নিয়ে বাসায় যাচ্ছি। কারণ ছাড়াই দেশে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। তিনি বলেন, তদারকি সংস্থা কী করছে, সেটা দেখার বিষয়।

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, রোজা এলেই বাড়তি মুনাফা করতে বিক্রেতারা সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এই অসাধুতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তদারকি সংস্থাগুলোর এদিকে নজর দিতে হবে।

কাওরান বাজারের মাংস বিক্রেতা মো. জুম্মন ব্যাপারী বলেন, মাংসের দাম হবে না কেন? গরু ও খাসির দাম বেড়েছে। কারণ গরু যারা পালন করে তাদের ব্যয় বেড়েছে। পশুকে খাবার দেওয়া থেকে শুরু করে ওষুধ, বিদ্যুৎ বিল সবকিছুর দাম বেড়েছে। ফলে এই দাম মাংসের ওপর পড়েছে। পাশাপাশি পরিবহণ খরচ বেড়েছে। রাস্তায় চাঁদাবাজি আছে। এছাড়া সামনে কুরবানির ঈদ। অনেক খামারি পশু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে দাম বাড়ছে।

বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, মাংসের দাম প্রতিবার সিটি করপোরেশন ঠিক করে। এবার দাম নির্ধারণ করা হয়নি। কেন করেননি আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। সামনে ঈদ। মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি করা হচ্ছে। অধিদপ্তরের টিম সার্বিকভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। তিনি জানান, তদারকির মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com