রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান এলাকার সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত ভবনে দ্বিতীয় দফা অপারেশন বা উদ্ধারকাজের জন্য রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর অবকাঠামোগত ক্লিয়ারেন্সের জন্য অপেক্ষা করছে ফায়ার সার্ভিস।
সংস্থাটির উপপরিচালক বাবুল চক্রবর্তী আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য জানান।
বাবুল চক্রবর্তী বলেন, উদ্ধারকাজ শুরুর জন্য ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত আছে। তবে স্ট্রাকচারাল ক্লিয়ারেন্স পেতে হবে। তিনি বলেন, ‘তিনজনের একটি টিম করা হয়েছে। তারা আসবেন। দেখবেন। তারপর আবার অভিযান শুরু হতে পারে।’
এদিকে এ ঘটনায় এখন মোট ১৮ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে এবং এর মধ্যে ১৬ জনের লাশ রাতেই তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। এখনো গুরুতর আহত অবস্থায় অনেকে চিকিৎসাধীন আছেন হাসপাতালে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে বিস্ফোরণের পর থেকে ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এবং সেনাবাহিনীর মিলিটারি পুলিশের একটি দলও ঘটনাস্থলে কাজ করেছে।
ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে রাত ১১টার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেছিল ফায়ার সার্ভিস। তবে সংস্থাটির মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর বেজমেন্ট ও গ্রাউন্ড ফ্লোরটি অনেকটা ধসে গেছে, কলামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কারণে তারা ঢুকতে পারছিলেন না। এরপর তারা রাজউক ও সেনাবাহিনীর মতামত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘নিচের কাজটি সেনাবাহিনীর সহায়তায় করা হবে। ভবনটি স্থিতিশীল করে আমরা পুরোদমে উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে।’
তখন তিনি তিনি জানিয়েছিলেন যে বিস্ফোরণের সময় মার্কেটটি চালু থাকায় ভেতরে আরো মানুষ আটকা পড়ে থাকতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় এর অবকাঠামোগত অবস্থা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরেই নতুন করে অভিযান শুরু করতে পারবে ফায়ার সার্ভিস।
মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ঢাকার নর্থ সাউথ রোডের সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটে। এতে পাশাপাশি আরো দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি টিম উদ্ধার কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের সাথে সেনাবাহিনী এবং পুলিশের সদস্যরাও কাজ করছে।
ভবনটির বেসমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার ছাদ ধসে বেসমেন্টের ওপর পড়েছে।
তবে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় রাতে ওপরের তলাগুলোয় উদ্ধার অভিযান চালানো হয়।
নর্থসাউথ রোডের ১৮০/১ ভবনটি ক্যাফে কুইন ভবন নামেও পরিচিত। কারণ এই ভবনের দোতলায় ক্যাফে কুইন নামে একটি রেস্তোরা আছে। নিচতলায় বেশিরভাগই স্যানিটারি আর গৃহস্থালি সামগ্রীর দোকান।
এছাড়া ভবনটির ওপরের তলাগুলোয় কয়েকটি অফিস এবং আবাসিক ফ্ল্যাট ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
একের পর এক বিস্ফোরণ, থামানোর উপায় মিলছে না
বাংলাদেশে গত এক মাসের মধ্যে ঢাকা ও বিভিন্ন জায়গায় একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনার বাইরেও বিগত কয়েক বছরে বড় ধরণের বিস্ফোরণের খবর গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।
তবে সবকটি বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে ‘জমে থাকা গ্যাসের’ বিষয়টিকে দায়ী করা হচ্ছে।
এর মধ্যে কয়েকটির দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। যে কটির তদন্ত প্রতিবেদন সামনে এসেছে সেখানে বিস্ফোরণের পেছনে মূলত দায়ী করা হয়েছে ভবন বা প্রতিষ্ঠানের মালিককে।
সূত্র : বিবিসি
Leave a Reply