উত্তর কোরিয়ার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যখন খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় একটি সঠিক ও জুতসই কৃষি নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি পদক্ষেপ’ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দেশটির শীর্ষ নেতারা।
অসমর্থিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার অনির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে ব্যাপক মৃত্যু কিংবা দুর্ভিক্ষের কোনো আলামত নেই।
তারা আরো বলেন, আসন্ন ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির বৈঠকটি সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের প্রতি সমর্থন জোগাড় করার উদ্দেশেই ডাকা হচ্ছে। কারণ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন তীব্র চাপ এবং নিষেধাজ্ঞাকে অস্বীকার করে, তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
সিউলের কিয়ংনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর ফার ইস্টার্ন স্টাডিজের অধ্যাপক লিম ইউল-চুল বলেন, ‘কিম জং উন তার পরমাণু কর্মসূচিকে স্থিরভাবে এগিয়ে নিতে পারবেন না, যদি তিনি দেশটিতে খাদ্য সমস্যার মৌলিকভাবে সমাধান করতে ব্যর্থ হন, এতে করে তার জনসমর্থন নড়ে যাবে। খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলা করার জন্য সমন্বিত ধারণাগুলি তুলে ধরতে এবং অভ্যন্তরীণ ঐক্যকে মজবুত করতেই ওই বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে।’
ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির একটি বর্ধিত পূর্ণাঙ্গ সভা ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে হওয়ার কথা। এর সুনির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি এখনো অজানা থাকলেও, পার্টির শক্তিশালী পলিটব্যুরো এর আগে বলেছিল, ‘কৃষি খাতের উন্নয়নে আমূল পরিবর্তনকে গতিশীলভাবে উন্নীত করার জন্য দিক পরিবর্তনের প্রয়োজন।’
সভাটি হবে পার্টির প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন, যা শুধুমাত্র কৃষি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্যই ডাকা হয়। যদিও উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তর সম্মেলনে তারা প্রায়শই এটিকে মূল বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে। গত ডিসেম্বরে একটি পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে, পার্টি স্বীকৃত ১২টি অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের মধ্যে একটি ছিল, দেশটির খাদ্য শস্যের উৎপাদন বাড়ানো।
উত্তর কোরিয়ার সঠিক অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি জানা বেশ কঠিন, মহামারী চলাকালীন দেশটি তার সীমানা কার্যকালে বন্ধ করে রেখেছিল। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে একটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ফলে আনুমানিক কয়েক লাখ লোক মারা যাওয়ার পর থেকে খাদ্য ঘাটতি এবং অর্থনৈতিক দুর্দশা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
সিউলের রাষ্ট্র পরিচালিত ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজির বিশ্লেষক ই জিসুন গত জানুয়ারিতে এক প্রতিবেদনে বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি চীন থেকে প্রচুর পরিমাণে চাল এবং আটা আমদানি করেছে। তবে খাদ্য ঘাটতি থাকলেও দেশটি কখনো যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, এবং জাপান থেকে খাদ্য সহায়তা গ্রহণ করে না।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
Leave a Reply