শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে সফল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। গতকাল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফাইনালে মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৭ উইকেটে পরাজিত করেন ইমরুল কায়েসরা। এ নিয়ে চতুর্থবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে কুমিল্লা। এতে শিরোপা জয়ের অপেক্ষা বাড়ল সিলেটের। মাশরাফির নেতৃত্বে প্রথমবার বিপিএলের ফাইনালে উঠেছিল চায়ের শহরের দলটি। তবে অধিনায়ক হিসেবে এবার আর দলকে চ্যাম্পিয়ন করার অতীত রেকর্ড ধরে রাখতে পারলেন না ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে সিলেট স্ট্রাইকার্স ৭ উইকেটে ১৭৫ রান করে। রান তাড়ায় লিটন দাসের ফিফটি (৫৫) আর জনসন চার্লস (৭৯*) ও মঈন আলির (২৫*) ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় কুমিল্লা। অধিনায়ক হিসেবে নিজের রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখলেন ইমরুল কায়েস। এর আগে তার নেতৃত্বেই দুবার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল কুমিল্লা। এ নিয়ে তৃতীয়বার দলকে ফাইনালে তোলার পাশাপাশি শিরোপাও জিতলেন তারা।
সিলেটের ১৭৫ রান অনায়াসেই টপকে যায় কুমিল্লা। ৩৪ রানে ২ উইকেট হারানোর পর লিটন ও চার্লসের ব্যাটে রানের চাকা সচল রাখেন তারা। ৩৬ বলে ফিফটি করেন লিটন। দলীয় ১০৪ রানে আউট হন তিনি। তার ৩৯ বলের ইনিংসে ছিল ৭ চার ও ১ ছক্কা। এরপর চার্লস ও মঈন জুটি দলকে জয়ী করে মাঠ ছাড়েন। জয়ের জন্য শেষ ২৪ বলে ৫২ রান দরকার ছিল তাদের। তবে রুবেলের ১৭তম ওভার ও উডের ১৯তম ওভারে তাণ্ডব চালান চার্লস। আর তাতেই জয়ের খুব কাছে পৌঁছে যায় কুমিল্লা। শেষ ওভারে ৩ রান তাড়ায় ৪ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য টপকে যান তারা। তবে চার্লসকে ব্যক্তিগত ৮ রানে জীবন দেন রুবেল। সে সময় ক্যাচটি মুঠোবন্দি করতে পারলে ম্যাচের ফল অন্যরকমও হতে পারত! সেই চার্লসই কুমিল্লার জয়ের নায়ক।
সিলেটের ১৭৫ রানে বড় অবদান নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের। তৌহিদ হৃদয় রান পাননি। শূন্য রানে সাজঘরে
ফিরেছেন তিনি। তবে দারুণ ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত আপন আলোয় উজ্জ্বল ছিলেন। ফাইনাল ম্যাচেও নজরকাড়া পারপরম্যান্স করেছেন। ইনিংসের শুরুই করেছিলেন আন্দ্রে রাসেলকে বাউন্ডারি মেরে। শান্তর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেছেন মুশফিকুর রহিমও। দলীয় ২৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর এই জুটির কল্যাণেই ৭ উইকেটে ১৭৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স।
অবশ্য কুমিল্লার ফিল্ডিংও ভালো ছিল না। একাধিক ক্যাচ হাতছাড়া না হলে সিলেটের দলীয় সংগ্রহটা আরও কম হতো। তবে ক্যাচ মিস তো খেলারই একটা অংশ! মঈন আলির বলে শান্ত বোল্ড হলে ভাঙে তৃতীয় জুটি। তবে সাজঘরে ফেরার আগে ঝলমলে ইনিংস খেলেন এই বাঁহাতি। ৩৮ বলে ফিফটি করা শান্ত ফেরেন ৪৫ বলে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে। আর মুশফিক হার না মানা ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন।
১০৫ রানে ৩ উইকেট হারায় সিলেট। এরপর অবশ্য নিয়মিত বিরতিতে বেশ কটি উইকেট হারাতে হয়েছে তাদের। তবে মুশফিকের দাপুটে ব্যাটিংয়ের কারণে অপর পাশের উইকেট হারালেও রানের চাকায় লাগাম পরাতে পারেননি কুমিল্লার বোলাররা। ১৬৪ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর মুশফিক আর তানজিম সাকিব জুটি মিলে ইনিংস শেষ করে মাঠ ছাড়ে সিলেট। মুশফিকের ৪৮ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৫ চার ও ৩ ছক্কায়। শেষ চার ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান স্কোরকার্ডে জমা করতে পারেন সিলেটের ব্যাটসম্যানরা। কুমিল্লার হয়ে মোস্তাফিজ ৩১ রানে ২ উইকেট নেন।
Leave a Reply