ইন্দোনেশিয়া ২০২৩ সালের জন্য অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস -এর (আসিয়ান) চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। আসিয়ানের এই দায়িত্ব চক্রাকারে সদস্য রাষ্ট্রগুলো পালন করে। এই দায়িত্ব পাওয়ার সাথে সাথে জাকার্তার উপর, জোটটির সদস্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে চাপ বাড়ছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও নামে পরিচিত। দুই বছর আগে একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমার সামরিক বাহিনী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্য নামে পরিচিত বহুল আলোচিত আসিয়ান শান্তি পরিকল্পনা মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ অবসান কার্যকরভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তবে এটি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদিদোর জন্য, তাতমাদাও প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে একটি নতুন এবং আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণের পথ প্রশস্ত করেছে।
নমপেনভিত্তিক রিস্ক অ্যানালাইসিস অ্যান্ড রিসোর্সেস ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক রস মিলোসেভিচ বলেন, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে আসিয়ানের বাকি নয় দেশ ও তাদের উদ্যোগকে মিয়ানমার দুঃখজনকভাবে পরীক্ষা করেছে। আর, জোটের শান্তি উদ্যোগের নেতৃত্বদানকারী ছোট দুই দেশ ব্রুনাই ও কম্বোডিয়াকে আশাহীন করে তুলেছে।
তিনি বলেন, আসিয়ানের নীতি সবসময়ই হস্তক্ষেপ করার বিপক্ষে। তবে, সমস্যা মানে সমস্যা। আর ওই পরিকল্পনাটি ছিল একটা বিপর্যয়। আমি মনে করি না যে আসিয়ান সঠিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে।
আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস গ্রুপের চার্লস সান্তিয়াগো এই বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে কোনো সংলাপ হয়নি এবং দুই বছর পর পরিকল্পনাটি দীর্ঘ দিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। এটা শেষ হয়ে গেছে। এটাকে কবর দেয়া হয়েছে।
তাতমাদাও এবং আসিয়ানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য চেষ্টা করেছে নমপেন। এই উদ্যোগে অনেক কিছু করার চেষ্টা হয়েছে। তাতমাদাওয়ের নৃশংসতায় ২ হাজার ৭০০ জনের প্রাণ গেলে তা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। এই নৃশংসতায় আরো ১৩ হাজার ৬০০ জনকে আটক করা হয়। আর, বাস্তুচ্যুত হয় ১০ লাখেরও বেশি বেসামরিক মানুষ।
সান্তিয়াগো বলেন, আগামী আগস্ট মাসে জান্তা সরকার যে ‘প্রতিশ্রুত নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের কথা বলছে তা প্রহসন বলে প্রমাণিত হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জাকার্তার বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে আসিয়ানে মিয়ানমারকে এনইউজি (ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট) আসন দেয়া, জান্তার সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করা, সামরিক মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর ওপর বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা এবং সর্বাত্মক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
Leave a Reply