এজন্যই হয়তো ক্রিকেটকে চির অনিশ্চয়তার খেলা বলে। কখনো কখনো একটা বলও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় হার-জিতের সমীকরণে। একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল হেসে-খেলেই সহজ জয় পাবে ভারত, সেখান থেকে ম্যাচ নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে আসে শ্রীলঙ্কা। তবে শেষ হাসি হাসতে পারেনি তারা৷ নাটকীয় এই ম্যাচে জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসেও জিততে পারেনি শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে হেরে গেছে ২ রানে। ফলে সিরিজেও ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে নামে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মা না থাকলেও এদিন শক্তিশালী একাদশ নিয়েই মাঠে নামে ভারত। ভারতের হয়ে টস করতে আসেন হার্দিক পান্ডিয়া। তবে টস ভাগ্য সায় দেয়নি, টেসে হেরে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিতে হয় হার্দিককে।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ছিল ছন্দময়। ২.২ ওভারেই স্কোরবোর্ডে আসে ২৭ রান। তবে ৭ রান করে শুভমান গিল ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এরপর কমে আসে রানের গতি। এরই মাঝে পাওয়ার প্লেতেই হারিয়ে ফেলে আরো এক উইকেট, ভয়ের কারণ হয়ে উঠার আগেই সূর্যকুমারকে ফেরান করুনারত্নে। পরের ওভারেই আর মাত্র ৮ রান যোগ হতেই ফিরেন স্যাঞ্জু স্যামসনও, ৫ রান করেন এ ব্যাটসম্যান।
৭ ওভারে ৪৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে ৩১ রানের জুটি গড়েন ইশান কিশান। ২৯ বলে ৩৭ রান করে কিশান ফিরলে ভাঙে এই জুটি। কিশান ফিরলে কমে আসে রানের গতি। এর মাঝে হার্দিক পান্ডিয়াও ফেরেন ২৭ বলে ২৯ রান করে। ভারতের সংগ্রহ তখন ১৪.১ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৪ রান। এমতাবস্থায় যখন মনে হচ্ছিলো ভারতে চেপে ধরবে শ্রীলঙ্কা, তখনই ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু ভারতের।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৩৬ বলে হার না মানা ৬৮ রানের জুটি গড়ে তুলেন দীপক হোডা ও অক্ষর প্যাটেল। ১ চার আর ৪ ছক্কায় মাত্র ২৩ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন হোডা, অক্ষরের ব্যাটে আসে ২০ বলে ৩১ রান। ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৬২ রান। হাসারাঙ্গা, মাদুশঙ্কা, থিকসানা, করুনারত্নে ও ধনঞ্জয়া ১টি করে উইকেট পান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে অভিষিক্ত শিভাম মাভির পেস আগুনে পুড়ে শ্রীলঙ্কা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কানরা৷ দ্বিতীয় ওভারেই ১ রান করে মাভির শিকার নিশানকা। ধনঞ্জয়াকেও নিজের শিকার বানান মাভি, ফেরান ৮ রানে। দলীয় ৪৭ রানে আসালাঙ্কা ফিরেন উমরান মালিকের শিকার হয়ে। ৩ বল পরেই ফিরেন ২৮ রান করে ফিরেন ওপেনার কুশল মেন্ডিস।
এইদিন দাঁড়াতে পারেননি ভানুকা রাজাপাকশেও, ১০ রান করে ফিরেছেন তিনি। তবে এর পরেই শ্রীলঙ্কাকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। দুজনের ২৩ বলে ৪০ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু শ্রীলঙ্কার। হাসারাঙ্গা ১০ বলে ২১ করে ফিরলে এবার করুনারত্নেকে নিয়ে ১২ বলে ২১ রানের জুটি গড়ে খেলা জমিয়ে তুলেন শানাকা।
তবে ২৭ বলে ৪৭ রান করে ফিরেন শানাকা। দ্রুত ফিরেন থিকসানাও। তবে এর পরেই দেখা দেয় নাটকীয়তা, খেলা জমিয়ে তুলেন করুনারত্নে। শেষ ২ ওভারে ২ উইকেটের শ্রীলঙ্কার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। তবে ১৯তম ওভারে ১৬ রান তুলে কাজটা সহজ করে রেখেছিলেন করুনারত্নে।
শেষ ওভারে প্রথম ৩ বলে ৮ রান আসায় মনে হচ্ছিল খেলাটা হয়তো ঘুরেই যাবে৷ হাসিমুখেই মাঠ ছাড়বে লঙ্কানরা। জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ৩ বলে ৫ রান। তবে সেই সমীকরণ আর মেলানো হয়নি লঙ্কানদের। ৪র্থ বলে কোন রান নিতে না পারলেও শেষ ২ বলে ২ রান নেয় শ্রীলঙ্কা। তবে তাতে রান আউট হোন রাজিথা ও মাদুশঙ্কা। ফলে শেষ বকে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা, সেই সাথে হেরে যায় ২ রানে।
Leave a Reply