ভূমিমাইন নিষিদ্ধ করার আন্তর্জাতিক প্রচারাভিযান (আইসিবিএল) -এর সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়া ও মিয়ানমার এ দুটি দেশই কেবল এ বছর অ্যান্টিপার্সোনেল মাইন ব্যবহার করেছে। এই দুটি দেশের কোনো দেশই ১৯৯৭ সালের খনি নিষেধাজ্ঞা চুক্তির পক্ষভুক্ত ১৬৪টি দেশের মধ্যে নেই।
আইসিবিএল হলো হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নেতৃত্বে বেসরকারি সংস্থাগুলোর একটি বৈশ্বিক জোট। এটি ১৯৯৭ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে। ল্যান্ডমাইন মনিটর ২০২২ রিপোর্টটি এই সপ্তাহে জেনেভায় জাতিসঙ্ঘে মাইন নিষেধাজ্ঞা চুক্তির বার্ষিক সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর ইউক্রেনে অ্যান্টিপার্সোনেল ল্যান্ডমাইনের হামলায় কমপক্ষে ২৭৭ জন নিহত বা পঙ্গু হয়ে গেছে।
রুশ বাহিনী ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণের পর থেকে বিশাল এলাকা জুড়ে ভূমি মাইন পুঁতে রেখেছে। ১৬ নভেম্বর খেরসনের আশপাশের পরিদর্শন করে সম্প্রতি মুক্ত এলাকায় কাজ করা ডি মাইনিং টিমগুলো এই বিস্ফোরকগুলো আবিষ্কার করে।
ইউক্রেনের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেরি আকোপিয়ান এই সমস্যার ভয়াবহতার মাত্রা তুলে ধরে সংবাদদাতাদের বলেন, আমরা বুঝতে পারছি ইউক্রেন বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ। এই মুহূর্তে, আমাদের ২ লাখ বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি এখনো খুঁজে দেখে মাইনমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। এটি কেবল মুক্ত অঞ্চলগুলোর কথা বলছি। আমাদের এখনো অনেক দখলকৃত অঞ্চল রয়েছে এই মুহূর্তে আমদের হিসেবে নেই।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আর্মস এডভোকেসি ডিরেক্টর এবং ল্যান্ডমাইন মনিটর ২০২২-এর সম্পাদক মেরি ওয়ারহামের মতে, রাশিয়া, হাত দিয়ে, বিমান থেকে ফেলে, আর্টিলারি এবং রকেট ফায়ারের মাধ্যমে মাইন মোতায়েন করেছে।
ওয়ারহাম ভিওএকে বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর থেকে রাশিয়ার বাহিনী কমপক্ষে সাত ধরনের অ্যান্টিপার্সোনেল ল্যান্ডমাইন ব্যবহার করেছে। এমন কিছু প্রমাণও রয়েছে যে তাদের দ্বারা উন্নততর ভিকটিম-অ্যাক্টিভেটেড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছে। আর এগুলো ল্যান্ডমাইন নিষিদ্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক চুক্তির নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে।
তবে রাশিয়া এ প্রতিবেদনের কোনো জবাব দেয়নি। মস্কো অ্যান্টিপার্সোনেল মাইন ব্যবহারের কথা অস্বীকারও করেনি।
২৪ বছর আগে ল্যান্ডমাইন মনিটর রিপোর্টে প্রথম প্রকাশিত হবার পর, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীও ধারাবাহিকভাবে অ্যান্টিপার্সোনেল মাইন ব্যবহার করে আসছে।
Leave a Reply