কাতার বিশ্বকাপে আজ প্রথম বারের মতো মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকান চ্যাম্পিয়নরা আজ মাঠে নামবে সৌদি আরবের বিপক্ষে। লুসাই আইকনিক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়।
এই ম্যাচ খেলতে নামলেই বিরল এক রেকর্ডের মালিক বনে যাবেন লিওনেল মেসি। শুধু এই ম্যাচ নয়, বিশ্বকাপে মেসির সামনে রয়েছে বেশ কিছু রেকর্ড নিজের করে নেয়ার সুযোগ। যেমন-
বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ আসরে অংশ নেয়া নিঃসন্দেহে মর্যাদার ব্যাপার। সেই মর্যাদার খুব কাছেই আছেন লিওনেল মেসি। আজ মাঠে নামা মাত্রই মেসির ক্যারিয়ারে যোগ হবে নতুন এই রেকর্ড। চতুর্থ ফুটবলার হিসেবে সর্বোচ্চ ৫টি বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ফুটবলার বনে যাবেন তিনি।
এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের পাঁচটি আসরে খেলেছেন অ্যান্তোনিও কারভাজল, লোথার ম্যাথিয়াস, রাফায়েল মার্কুয়েজ। লিওনেল মেসি অংশ নিয়েছেন চারটি বিশ্বকাপে। তাই আজ মাঠে নামা মাত্রই তার নামটিও যুক্ত হয়ে যাবে ম্যাথিউস-মার্কুয়েজদের পাশে।
শুধু তাই নয়, আরো এক রেকর্ড সঙ্গী করেই কাতার বিশ্বকাপ শুরু করতে যাচ্ছেন লিওনেল মেসি। এবারের বিশ্বকাপে খেলতে আসা সব ফুটবলারদের মাঝে সবচেয়ে বেশী বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলেছেন তিনি, সংখ্যা ১৯টি। তার ঠিক পেছনেই রয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তিনি মেসির চেয়ে দুই ম্যাচ কম খেলেছেন।
আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ডটি গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার দখলে। তিন বিশ্বকাপে ১২ ম্যাচ খেলে তিনি গোল করেছিলেন ১০টি। মেসির গোল সংখ্যা ৬টি। এবারের বিশ্বকাপে কিংবা আজকের ম্যাচে পাঁচটি গোল করলেই বাতিস্তুতার রেকর্ডটি ভেঙে দিবেন মেসি।
তাছাড়া মেসির সামনে রয়েছে আরো কিছু রেকর্ড নিজের নামে করে নেয়ার বড় সুযোগ। যেমন-
আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি দিয়েগো ম্যারাডোনার। ম্যারাডোনা বিশ্বকাপে মোট ২১টি ম্যাচ খেলেছেন। এবারের বিশ্বকাপে অন্তত তিনটি ম্যাচ খেললেই ম্যারাডোনাকে ছাড়িয়ে যাবেন মেসি। অর্থাৎ শুধু গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ খেললেই ম্যারাডোনার এ রেকর্ড অনায়াসে ভাঙতে পারবেন তিনি।
শুধু আর্জেন্টিনার হয়ে বেশী কিংবা এই বিশ্বকাপে খেলতে আসা অন্য ফুটলারদের তুলনায় বেশী নয়, মেসির সামনে রয়েছে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড তৈরির সুযোগও। তবে সেজন্য অবশ্য আর্জেন্টিনার ফাইনালে পৌঁছানো চাই। আর্জেন্টিনা যদি ফাইনাল খেলে এবং মেসি সাতটি ম্যাচেই খেলেন, তবে তিনি টপকে যাবেন লোথার ম্যাথিউসকে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন লোথায় ম্যাথিউস, জার্মানির জার্সিতে ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন মিরোস্লাভ ক্লোসা। তিনি বিশ্বকাপে মোট ১৭টি ম্যাচ জিতেছেন জার্মানির হয়ে। এদিকে লিওনেল মেসি বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত মোট ম্যাচ জিতেছেন ১৩টি। অর্থাৎ বিশ্বকাপে অন্তত কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত যদি আর্জেন্টিনা অপরাজিত থাকে কিংবা গোটা বিশ্বকাপে মোট পাঁচটি ম্যাচ জিততে পারে, তাহলেই লিওনেল মেসি ক্লোসাকে ছাড়িয়ে গিয়ে তৈরি করবেন নতুন রেকর্ড।
যদিও বিশ্বকাপে মেসি এখন পর্যন্ত ছয়টি গোল করেছেন, কিন্তু আফসোসের ব্যাপার হলো তিনি কোনো বিশ্বকাপেই নক আউট পর্বে কখনো গোল করতে পারেননি। যদি এবারে আর্জেন্টিনা নক আউট পর্বে পৌঁছোয় এবং লিওনেল মেসি দু’একটি গোল করতে পারেন, তাতে নতুন কোনো রেকর্ড না হলেও আর্জেন্টাইন ভক্ত-সমর্থকদের দীর্ঘদিনের আক্ষেপটা মিটে যাবে বটে।
তাছা সর্ববশেষে যেটি না বললেই নয়- যদি এবারে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেই যায়, তবে সেটিই হবে লিওনেল মেসির সবচেয়ে বড় রেকর্ড এবং সবচেয়ে বড় অর্জন।
Leave a Reply