শুরুর একাদশে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে আবারো রাখেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ এরিক টেন হাগ। তবে এবার সতীর্থের চোটে আগেভাগে মাঠে নামলেন পর্তুগিজ তারকা। কোচকে ভুল প্রমাণিত করে দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে দারুণ এক গোলে ইতিহাস গড়ার পাশাপাশি জয়ও নিশ্চিত করে দিলেন রোনালদো।
এভারটনের গুডিসন পার্কে রোববার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে এভারটনের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। প্রথমে এভারটনের হয়ে গোল করেন অ্যালেক্স আইওবি। ইউনাইটেডের হয়ে সমতাসূচক গোলটি করেন আন্থোনি এবং পরে জয়সূচক গোলটি করে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ক্লাব ফুটবলে ৭০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন রোনালদো।
গতসপ্তাহ ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ভরাডুবি হওয়া ইউনাইটেড এই ম্যাচেও কিছু বুঝে উঠার আগেই গোল হজম করে। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই স্বাগতিকদেরকে উল্লাসে ভাসান অ্যালেক্স আইওবি। দূর থেকে জোরাল শটে ইউনাইটেডের জালে বল পাঠান এই নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার।
পাল্টা জবাব দিতে অবশ্য দেরি করেনি ইউনাইটেড। মিনিট দশেক পরেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরান আন্থোনি। আন্থোনি মার্শিয়ালের থ্রু বল ধরে বক্সে ঢুকে এভারটন গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে স্বাগতিকদের জালে বল পাঠান এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। প্রিমিয়ার লিগে তিন ম্যাচ খেলে তিন ম্যাচেই গোল পেলেন ব্রাজিলের এই তরুণ তুর্কি।
বয়সের ভারে গতি হারানো রোনালদো মৌসুমের শুরু থেকে চেনা ছন্দেও নেই। জায়গা হারিয়েছেন শুরুর একাদশে। ইদানিং তার মাঠে নামার সুযোগ হয় শেষ দিকে, বদলি হিসেবে।
তবে রোববার মার্শিয়ালের চোটে ৩০তম মিনিটেই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে নামিয়ে দেন কোচ। সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগান রোনালদো। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে ইউনাইটেডকে ম্যাচে প্রথমবার এগিয়ে নেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। কাসেমিরোর থ্রু বল ধরে অনেকটা এগিয়ে বক্সে ঢুকে নিখুঁত কোনাকুনি শটে এভারটন গোলরক্ষক পিকফোর্ডকে পরাস্ত করে জালে বল জড়ান পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। পাশাপাশি পূর্ণ হয় তার ক্লাব ক্যারিয়ারে ৭০০ গোল। গত মৌসুমে ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতার চলতি মৌসুমে এটি মাত্র দ্বিতীয় গোল, প্রিমিয়ার লিগে প্রথম! ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সফরকারী দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে চাপ ধরে রেখে খেলতে থাকে ইউনাইটেড। পাল্টা আক্রমণে উঠার চেষ্টা করে এভারটনও। ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণ শাণিয়ে এক ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে কাটিয়ে জালে বল পাঠান মার্কাস র্যাশফোর্ড। তবে অফসাইডে ছিলেন তিনি।
এরপর ইউনাইটেডের ওপর যেন চেপে বসে এভারটন। করতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। যোগ করা সময়ের চার মিনিটে বলতে গেলে ইউনাইটেডের বক্সেই ছিল বল। জেমস গার্নারের বাঁ দিক থেকে কোনাকুনি শট কোনোমতে ঠেকিয়ে মূল্যবান তিনটি পয়েন্ট নিশ্চিত করেন ডেভিড ডি গিয়া। ২-১ গোলের স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টেন হাগের শিষ্যরা।
আগের ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ৬-৩ গোলে হারার পর এবার আবার জয়ের পথে ফিরল ইউনাইটেড। সঙ্গে রোনালদোর গোল পাওয়াটাও তাদের জন্য দারুণ কিছু।
আট ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এক ম্যাচ বেশি খেলা এভারটন ১০ পয়েন্ট নিয়ে আছে ১২ নম্বরে। দিনের আরেক ম্যাচে লিভারপুলকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শীর্ষে ফিরেছে আর্সেনাল, ৯ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২৪। সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে ম্যানচেস্টার সিটি।
Leave a Reply