ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অন্তঃসত্ত্বা রত্না আক্তার রহিমার পেটে থাকা ৮ মাসের বাচ্চা পেট ফেটে বের হলেও আল্লাহর রহমতে অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় সে। হাসপাতালে এখন চিকিৎসাধীন নবজাতক অন্য মায়ের দুধ পান করছে। শিশুটি বাবা, মা ও বোনকে হারিয়ে এখন এতিম। সে জানেও না কে তার বাব-মা। নবজাতকের বড় বোন জান্নাত তার নাম রেখেছে ‘ফাতেমা’।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন নবজাতক ও অপর দুই সন্তানের সহায়তার জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর খোলা হয়েছে। যারা নবজাতক শিশু ও তার বোন জান্নাত এবং ভাই এবাদতকে সহায়তা করতে চান, তারা ব্যাংক হিসাবে সহায়তা পাঠাতে পারবেন। হিসাবের শিরোনাম ‘রত্না আক্তার রহিমার নবজাতক ও অপর দুই সন্তানের সহায়তার হিসাব। হিসাব নম্বর ৩৩২৪১০১০২৮৭২৮ সোনালী ব্যাংক, ত্রিশাল শাখা।
হিসাব পরিচালনা করবেন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু।
সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আক্তারুজ্জামান দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারের খোঁজ নিতে যান। ওই সময় পরিবারটির হাতে ব্যাংক হিসাবের চেকবইসহ ১০ হাজার টাকা সহায়তা তুলে দেন।
নিহত জাহাঙ্গীরের মা সুফিয়া বেগম জানান, আমার পুত্রবধূর পেটে যখন ছয় মাসের বাচ্চা ছিল, তখন আমার বড় নাতনি তার মাকে বলেছিল— আমার ছোট বোন হলে তার নাম রাখবা ফাতেমা। বড় নাতনির ইচ্ছায় নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে ফাতেমা।
নিহত জাহাঙ্গীরের বড় মেয়ে জান্নাত জানান, আমি আম্মুকে বলেছিলাম আমাদের ছোট বোন হলে তার নাম ফাতেমা রাখব। আম্মু বলেছিল ঠিক আছে। এখন তো আমার আম্মা, আব্বা কেউ বেঁচে নেই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আক্তারুজ্জামান জানান, ডিসি মহোদয়ের নির্দেশে আমি নিহত পরিবারের খোজ খবর নিয়েছি। নিহতের পরিবারের হাতে ব্যাংক হিসাবের চেকবইসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা তুলে দেওয়া হয়েছে। আর নিহতের মা প্রতিবন্ধী সুফিয়া বেগমকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। নিহত পরিবারটির খোজখবর সবসময় অব্যাহত থাকবে। নিহতের পরিবারকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুর ২টায় উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের রায়মনি গ্রাম থেকে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও ছয় বছরের কন্যাসন্তানকে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য ত্রিশাল পৌর এলাকায় আসেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পারাপারের সময় দ্রুতগামী মালবাহী ময়মনসিংহগামী ট্রাকটি চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়।
Leave a Reply