ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের নির্দেশে একদল আশ্রয়প্রার্থী শরণার্থীকে নিয়ে ব্রিটেন থেকে রুয়ান্ডাগামী প্রথম ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এই বিতর্কিত ফ্লাইটে সাত আশ্রয়প্রার্থীকে রুয়ান্ডা পাঠানো হচ্ছিল। তবে ব্রিটিশ সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে ফ্লাইটটি শেষ মুহূর্তে বাতিল করা হয়েছে এবং ওই সাত আশ্রয়প্রার্থীকে বিমান থেকে নামিয়ে নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকারের সাথে করা এক চুক্তির ভিত্তিতে ওই সাত আশ্রয়প্রার্থীকে আফ্রিকার সবচেয়ে ছোট দেশ রুয়ান্ডায় পাঠানোর কথা ছিল। একটি ব্রিটিশ আদালত এ কাজের ছাড়পত্রও দিয়েছিল। ব্রিটেনের বেশ কয়েকজন মানবাধিকার কর্মী মানবেতরভাবে আশ্রয়প্রার্থীদের আফ্রিকায় পাঠানোর বিরুদ্ধে আদালতে বেশ কিছু মামলা দায়ের করেছিলেন। কিন্তু তার সবগুলোই ব্রিটিশ আদালতে খারিজ হয়ে যায়।
অবশেষে লন্ডন সময় গতরাত (মঙ্গলবার রাত) সাড়ে ১০টায় ব্রিটেনের একটি সামরিক বিমানঘাঁটি থেকে সাত শরণার্থীকে নিয়ে একটি বিমানের আকাশে উড্ডয়ন করার কথা ছিল। কিন্তু ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের রায় ঘোষণার কারণে শেষ মুহূর্তে ফ্লাইটটি বাতিল হয়ে যায়।
ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত একজন ইরাকি আশ্রয়প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছে, আবেদনকারীর অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে রুয়ান্ডাগামী ফ্লাইট বন্ধ করতে হবে। ইউরোপীয় আদালতের এই রায় ব্রিটিশ আদালতের সম্পূর্ণ বিপরীত। কারণ, ওই আদালত বলেছিল, রুয়ান্ডায় এসব আশ্রয়প্রার্থী তেমন কোনো ঝুঁকির মুখে পড়বে না।
ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে অবৈভাবে ব্রিটেনে প্রবেশকারী শরণার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠাতে গত ১৪ এপ্রিল দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটিশ সরকার আশ্রয়প্রার্থী শরণার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠাবে। রুয়ান্ডার কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্রয় আবেদন বিবেচনা করবে। আবেদন গৃহীত হলে সেদেশে তাদের থাকতে হবে।
ব্রিটিশ সরকার দাবি করেছে, চুক্তির কারণে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ার ঝুঁকি নেয়া ব্যক্তির সংখ্যা কমবে। এছাড়া মানব পাচারকারীদেরও ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জাতিসঙ্ঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এমন চুক্তি সইয়ের খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছে এবং কঠোরভাবে এর সমালোচনা করেছে।
Leave a Reply