মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন দীর্ঘ সাত বছর পর আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। যা নিয়ে জেলার রাজনীতিকদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই সম্মেলনকে ঘিরে দীর্ঘদিন দলীয় কর্মকা- থেকে দূরে থাকা নেতাকর্মীদের অনেকে হয়ে উঠেছেন সরব। পাশপাশি আগামী দিনের নেতৃত্ব, বিশেষ করে সভাপতি-সম্পাদকের পদপ্রাপ্তির বিষয়ে নতুন-পুরাতন নেতাদের ঘিরে চলছে নানা সমীকরণ। সভাপতি-সম্পাদক পদে কেউ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থিতা ঘোষণা না করলেও এ দুই পদের জন্য অনেক নেতা এরই মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। তবে সাধারণ নেতাকর্মীদের চাওয়া, সম্মেলনের মাধ্যমে সৎ ও কর্মীবান্ধব কেউ নেতৃত্বে আসুক। আজ সকাল ১০টায় শহরের নোমানী ময়দানে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। প্রধান বক্তা থাকবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেবেন মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর, মাগুরা-২ আসনের এমপি ড. বীরেন শিকদারসহ স্থানীয় নেতারা। উদ্বোধন শেষে নতুন কমিটি গঠনবিষয়ক দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে শেখ কামাল ইনডোর স্টেডিয়ামে। মাগুরা জেলা
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ। যেখানে অধ্যাপক ডা. সিরাজুল আকবর এমপি সভাপতি ও পঙ্কজ কুমার কু-ু সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। কিন্তু পরের দিনই অধ্যাপক আকবর মারা যান। এরপর জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তানজেল হোসেন খানকে কেন্দ্র থেকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি তানজেল খান মারা গেলে সভাপতি পদটি আবারও শূন্য হয়। পরে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহকে দেওয়া হয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব। সেই থেকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আব্দুল ফাত্তাহ ও পঙ্কজ কু-ুু। এবারের সম্মেলনে বর্তমান কমিটির প্রবীণ এই দুই নেতাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রেখেই নতুন কমিটি হতে পারে বলে আভাস রয়েছে। এর মধ্যে পঙ্কজ কু-ু বা জ্যেষ্ঠ কাউকে সভাপতি করা হতে পারে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে মেধা ও রাজনৈতিক যোগ্যতার ভিত্তিতে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। যদিও সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য কোনো নেতাকেই প্রকাশ্যে প্রচারে নামতে দেখা যায়নি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতৃত্ব নিয়ে চলছে নানামুখী প্রচার। সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর মেয়র খুরশীদ হায়দার টুটুল, সাবেক ছাত্রনেতা কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেতা মিরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাখারুল ইসলাম শাকিল, সাবেক ছাত্রনেতা ড. ওহিদুর রহমান টিপু, রানা আমির ওসমান, অ্যাডভোকেট রাশেদ মাহমুদ শাহিনসহ অনেকের নাম ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
পঙ্কজ কু-ুু ছাড়াও সভাপতি পদে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার নাম এসেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুন্সী রেজাউল হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাসির বাবলু, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক সৈয়দ শরিফুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক শফিকুজ্জামান বাচ্চু।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম বাবুল ফকির বলেন, আগামী নির্বাচনকে মাথায় রেখে জেলা কমিটি গঠিত হতে হবে। যারা নেতা নির্বাচিত হবেন তাদের কাজ করতে হবে সব কিছুর ঊর্র্ধ্বে থেকে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কু-ু বলেন, সম্মেলন ঘিরে মাগুরাতে ভিন্ন আঙ্গিকে কার্যক্রম চলছে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকলেও কেউ নিজস্ব ব্যানার, ফেস্টুন এবং আনন্দ মিছিল করতে পারবে না। সব কিছু জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে হবে। যেখানে ব্যবহার হবে শুধু জাতির পিতা ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ছবি। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যে নেতৃত্ব দেবেন, সেটা সবাই মেনে আগামী দিনে চলার পথ আমরা আরও সুদৃঢ় করব।
Leave a Reply