বরগুনায় এসে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন মৌ। জিম্মি করে রেখেছেন একটি পরিবারকে। উপায় না পেয়ে ১১ দিন পর ছেলের বাবা এসে আশ্বাস দেন মৌকে তার পুত্রবধূ করবেন। তবে তিনি শর্ত জুড়ে দেন সাথে। তার ছেলের সাথে বিয়ে হতে হলে পূর্বের বিয়ের তালাকনামা নিয়ে আসতে হবে। মেয়ের পরিবারকে এখানে আসতে হবে এবং পারিবারিকভাবে প্রস্তাবের মাধ্যমে বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
সব শুনে হতভম্ব হয়ে যায় প্রতারক মৌ, ব্যর্থ হয় বিয়ের শর্ত মানতে। অবশেষে ভুক্তভোগী পরিবারের মামলার জেরে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
বরগুনার চান্দখালী মাহমুদুল হাসান নামের এক ছেলের বাড়িতে এসে বিয়ের দাবি তুলে ছেলের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো জামালপুরের মৌ নামের এই তরুণী। গত ২৯ এপ্রিল ২২ বরগুনার চান্দখালীর এক ভাড়াটিয়া বাসায় থাকা মাহমুদুল হাসানের বাড়িতে এসে অবস্থান করে কথিত মৌ নামের তরুণী।
ওই মেয়ের বাড়িতে আসার খবর পেয়েই দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান মাহমুদুল ও তার পরিবার। মৌ এসে দরজার সামনেই অবস্থান করেন, এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার প্রেমিক (মাহমুদুল হাসান) এসে বিয়ে না করলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে গণমাধ্যমে প্রচার হয়।
দুই দিন পার হয়ে যাওয়ার পর স্থানীয়দের সহায়তায় ঘরের তালা ভেঙ্গে ভেতরে অবস্থান করেন মৌ। পরে ছেলের মামা ঘটনাস্থলে আসলে তাকে আটকে রাখা হয়। প্রতিদিনের আপডেট প্রচার হচ্ছিল গণমাধ্যমে, একের পর এক সাক্ষাৎকার দিচ্ছে মৌ। এর ফলে বেরিয়ে আসতে শুরু করে তার আসল পরিচয়।
এক পর্যায়ে জানা যায়, মৌ-এর আসল নাম শিখা, তার বাড়ি জামালপুরে, তিনি ঢাকা অবস্থান করে একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেছেন। বিয়েও হয়েছিলে একজনের সাথে। সেখানে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।
এভাবে আরো তথ্য বেরিয়ে আসে গণমাধ্যমে। জানা যায়, কথিত মৌ নামের মেয়েটির এটি একটি ফাঁদমাত্র। অনেকের সাথে এরকম মিথ্যা পরিচয়ের ফাঁদ পেতে টাকা হাতিয়ে নেয়াই ছিলো তার নেশা।
তারই ধারাবাহিকতায় মাহমুদুল হাসানের সাথে মিথ্যা পরিচয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এই নারী। বিভিন্নভাবে ছবি তুলে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টাও করেন।
অতঃপর বিষয়টি নজরে আসে বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সাইমুল ইসলাম রাব্বির। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি আদালতের নজরে এনে আবেদন করেছিলাম।
বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি আমলে নিয়ে বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) আইনি পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। জাস্টিস অব দ্য পিস এই আইন নিয়েছেন বিচারক।
এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ মে) নতুন একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী পরিবার। বিষয়টি আমলে নিয়ে এজাহারের আদেশ দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
অবশেষে মাহমুদুলের পরিবারের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বরগুনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে শিখা আক্তার মৌ’কে।
Leave a Reply