বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি মো. ফয়জুল হাসানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় ফয়জুলের বন্ধু মো. সোহাগ মিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড এবং পরিবারের বাকি চার সদস্যদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লব এ মামলার রায় দেন। আদালত এ সময় ফয়জুলকে ২০ হাজার টাকা এবং সোহাগকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- ফয়জুলের বাবা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুর রহমান ও ভাই মো. এনামুল হাসান। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চত করে আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি মমিনুর রহমান টিটু বলেন, এ মামলার ৬২ সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে গত ১০ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন আদালত। এরপর গত ২১ ও ২২ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলার প্রধান আসামি ফয়জুল হাসান আগে থেকেই কারাগারে ছিলেন। যুক্তিতর্কের শেষ তারিখে বাকি ৫ আসামির জামিন স্থগিত করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ সব আসামির উপস্থিতিতে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডবল গ্রাউন্ড সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে বসা অধ্যাপক জাফর ইকবালকে পেছন থেকে মাথায় ছুরিকাঘাত করে এক তরুণ মো. ফয়জুল হাসান। হামলাকারী ফয়জুলকে তখনই আটক করেন উপস্থিত ছাত্র-শিক্ষকরা। তারপর তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গুরুতর আহত অধ্যাপক জাফর ইকবালকে প্রথমে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরবর্তী সময়ে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরদিন শাবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে সিলেটের জালালাবাদ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে জালালাবাদ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম।
তদন্ত শেষে সে বছর ৬ মে ফয়জুলকে প্রধান আসামি করে মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম। অভিযোগপত্রের আলোকে সে বছর ৪ অক্টোবর এই ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করেন আদালত। পরে ২০২০ সালে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে মামলাটি এই ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
Leave a Reply