চতুর্দশ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলে সহকারী জজ হিসেবে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন নাটোরের সুমাইয়া নাসরিন। গত বৃহস্পতিবার সহকারী জজ নিয়োগের জন্য নেওয়া বিজেএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও মনোনীত ১০২ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে সবার আগে সুমাইয়ার রোল রয়েছে।
সুমাইয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তার স্নাতকোত্তর (এলএলএম) পরীক্ষা চলছে। তিনি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নাজনীন খাতুন ও জীবন বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (অব) আবুল কালাম আজাদ দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, তার জন্মস্থান নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার লক্ষ্মীকোল গ্রামে। স্থানীয় আরএন কিন্ডারগার্টেন স্কুলে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। এরপর লক্ষ্মীকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে বড়াইগ্রাম
পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে ২০১০ সালে জেএসসিতে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ এবং ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করেন। একই স্কুল থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে ২০১৩ সালে এসএসসি পাস করেন।
পরে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন। সেখানে ২০১৫ সালে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। ২০২১ সালের স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিচ্ছেন।
বিজেএস পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্যের পেছনে পরিবার ও বিভাগের শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন সুমাইয়া নাসরিন। তিনি বলেন, ‘সত্যি বললে, আমি প্রথম হব, এমনটা প্রত্যাশা ছিল না। আমার টার্গেট ছিল মেধা তালিকায় নাম এলেই হবে।’
বিচারবঞ্চিত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়ে সব সময় প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে তার অবস্থান থাকবে উল্লেখ করে সুমাইয়া নাসরিন বলেন, ‘আমার কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল না। আমি বড় হয়ে এই হব বা ওই হব। সময় যখন যা ডিমান্ড করবে, তখন সেটাই করব। তবে যেহেতু বিচারকের লাইনে এলাম, তাই সব সময় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করব।’
সুমাইয়া নাসরিন আরও বলেন, নিয়মিত পড়ালেখার বিকল্প নেই। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সমসাময়িক বিষয়ে ধারণা থাকতে হবে। তিনি আগামীর পথচলায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন। মা নাজনীন খাতুন ও বাবা আবুল কালাম আজাদ মেয়ের সাফল্যে অত্যন্ত খুশি। মেয়ের কৃতিত্বের খবর শুনে আত্মীয়স্বজন ছাড়াও অনেকে ফোন করে খোঁজখবর নিচ্ছেন, অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
Leave a Reply