1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

সিলেটে দেড় বছরেও শুরু হয়নি রায়হান হত্যা মামলার বিচার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

দেড় বছর চলে যাচ্ছে। এখনো বিচার শুরু হয়নি। এ নিয়ে নানা শঙ্কা পরিবারে মাঝেমধ্যে অজানা আতঙ্ক গ্রাস করে মা সালমা বেগমকে। লড়াইয়ে নেমেছেন। আসছে নানা লোভনীয় প্রস্তাব। আড়াল থেকে ভয়ও দেখানো হচ্ছে। এর পরও টলছেন না মা। দাবি তার একটা- ছেলে হত্যার বিচার।

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান হত্যা। গত ২০২০ সালের ১০ই অক্টোবর রাতে পুলিশ হেফাজতে পিটিয়ে হত্যা করা হয় নগরের নেহারীপাড়ার যুবক রায়হানকে। এরপর ঘটনা নিয়ে অনেক নাটক। ৬ আসামির মধ্যে ৫ জনই পুলিশ। দু’জন সাব ইন্সপেক্টর। ফলে আইনের লোকরা আসামি হওয়ার কারণে লড়াইয়ে নামতে হয়েছে রায়হানের পরিবারকে। প্রথমেই বলা হয়েছিল- রায়হান ছিনতাইকারী; গণপিঠুনিতে মারা গেছে। সেই যুক্তি দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি। ফলে রায়হান হত্যা নিয়ে মায়ের আন্দোলনে একাত্ম হয়েছিল সিলেটের মানুষ। বিচার দাবিতে আন্দোলন চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল সিলেট নগর। ‘অপরাধী’ পুলিশ সদস্যরা পিছু হটে। এমনকি দেশ ছেড়ে পালায় প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। ঘটনার এক মাসের মাথায় সে কানাইঘাট সীমান্তে সিলেট জেলা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। রায়হান হত্যা মামলার নির্ধারিত তারিখে গতকাল সিলেটের আদালত পাড়ায় এসেছিলেন রায়হানের মা সালমা বেগম। তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘রায়হান হত্যার পর বলা হয়েছিল সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে আলোচিত মামলার বিচার করবে। কিন্তু ঘটনার দেড় বছর হয়ে গেল এখনো বিচার শুরু হয়নি। মঙ্গলবার চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি।’ তিনি বলেন- ‘আসামিরা এক সময়ের আইনের লোক ছিল। তারা মামলার ফাঁকফোকর জানে। সুতরাং মামলার বিচার ব্যবস্থাকে বিলম্ব করতে তারা সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে আমাদের কাছেও সমঝোতার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে। এখনো আসামিরা নানা নাটক সৃষ্টি করছে বলে জানান তিনি।’ সালমা বেগমের দাবি রায়হান হত্যার দ্রুত বিচার। আগেও তিনি দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তদন্তেও চলে যায় ৮ মাস। ২০২১ সালের ৫ই মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই অভিযোগপত্র জমা দেয়। এতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরকে প্রধান আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস, এসআই হাসান উদ্দিন ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কথিত সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান। নোমান ছাড়া বাকি সবাই কারাগারে। চার্জশিট জমা দেয়া হলেও কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকার কারণে মামলার বিচার শুরু যায়নি। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, নোমান পলাতক থাকায় তার মালামাল ক্রোক, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিসহ কয়েকটি প্রক্রিয়া শেষ করতে হয়েছে। এতে কয়েক মাস সময় অতিবাহিত হয়েছে। এ ছাড়া আসামি পক্ষের সময় প্রাপ্তির যে অধিকার রয়েছে সেটিও সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এতে করে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবুল ফজল চৌধুরী গতকাল মানবজমিনকে জানিয়েছেন- প্রথমে করোনা, পরে পলাতক আসামির হুলিয়া জারি এবং আসামিপক্ষের টাইম পিটিশনসহ নানা কারণে মামলার কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। চার্জশিট প্রদানেও বিলম্ব হয়েছে। গত ৩০ শে মার্চ মামলাটি বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে মহানগর জজ আব্দুর রহিমের আদালতে। এখন আর সময় নেয়া হচ্ছে না। আদালত আইনি প্রক্রিয়ার ভেতরে থেকেই দ্রুত মামলার বিচার শেষ করতে আগামী ১৮ই এপ্রিল পরবর্তী তারিখ দিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে; ওই দিনই আদালতে চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট নওশাদ আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘আমরা সময় নিতে চাই না। আইনিভাবে তারা যে সময় চাচ্ছে সেটি পাবে। আদালতসহ আমরা আইনজীবীরা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সচেষ্ট আছি।’ তিনি জানান, ‘আর কোনো আইনি জটিলতা না এলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাতে বাদীপক্ষ বিচার পায়, সেটার জন্য আমার সজাগ আছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com