ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাজ্য ও ভারত হাইকমিশনারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশের রাষ্ট্রদূত ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইফতার করেছেন বিএনপি মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা। রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে গতকাল মঙ্গলবার মুসলিম দেশসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের কূটনীতিকদের সম্মানে এই ইফতারের আয়োজন করে বিএনপি। তবে অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দেশ চীন ও রাশিয়ার কোনো প্রতিনিধিকেই দেখা যায়নি। এমনকি সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, আরব আমিরাত, ওমান, বাহরাইনের মতো মুসলিম দেশগুলোর কোনো প্রতিনিধিও আসেননি বিএনপির ইফতার আয়োজনে।
এ বিষয়ে দলের কূটনৈতিক উইংয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য আমাদের সময়কে জানান, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিদের এই ইফতার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের আমন্ত্রণে সব মিলিয়ে ২০-২১টির মতো দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। কিন্তু চীন, রাশিয়াসহ অনেক মুসলিম দেশের কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে আসেননি। বিগত সময়ে পাকিস্তানের হাইকমিশনার যোগ দিলেও এবার তিনিও আসেননি। তবে পাকিস্তানের একজন প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অনুষ্ঠানে কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইফতারের আগ মুহূর্তে স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘বিগত দিনগুলোতে দলের চেয়ারম্যান বেগম খালেদা জিয়া আপনাদের সঙ্গে ইফতার করতেন। তিনি আজ গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন।’ এর আগে বিএনপি মহাসচিব কূটনীতিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মার শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে অনুষ্ঠিত মোনাজাতে সবাই অংশ নেন।
এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এসওয়াই রামাদান, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ড, তুর্কির রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরান একই টেবিলে বসে ইফতার করেন। ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শিউয়াখ, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন এবং পাকিস্তান, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও বিএনপির এই ইফতারে যোগ দেন। এ ছাড়া ছিলেন জাতিসংঘ শরণার্থী কমিশন, ইউএনডিপি, এনডিআই, ডেমোক্রেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিরা।
বিশিষ্টজনদের মধ্যে ইফতারে অংশ নেন শিক্ষাবিদ আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া ও অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন। সংবাদিকদের মধ্যে অংশ নেন দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। এ ছাড়া ব্যাংকার বখতিয়ার নাসের বখতিয়ার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব তাজুল ইসলাম, সাবেক কূটনীতিক মো. আল হারুনসহ সাবেক সরকারি ও বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ইফতারে ছিলেন।
দলীয় নেতাদের মধ্যে ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু; ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাসির, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সুজা উদ্দিন, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, আবদুল কাইয়ুম, এনামুল হক চৌধুরী, বিজন কুমার সরকার, ফজলে এলাহী আকবর; যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন ও হাবিব উন নবী খান সোহেল। কেন্দ্রীয় অন্য নেতাদের মধ্যে ইফতারে অংশ নেন শামা ওবায়েদ, আসাদুজ্জামান, তাবিথ আউয়াল, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, অনিন্দ্য ইসলাস অমিত, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও নজরুল ইসলাম আজাদ।
Leave a Reply