সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সাচিতা হোসেন সেঁজুতি হত্যার ঘটনায় তার প্রেমিক আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার গভীর রাতে জালালাবাদ গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে কলারোয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
সোমবার সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম সালাউদ্দিন আহম্মদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আব্দুর রহমান।
গ্রেফতার আব্দুর রহমান (১৯) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। সে কলারোয়া সরকারি কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ জানায়, কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের কৃষক সোহরাব হোসেন পলাশের মেয়ে কলারোয়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাচিতা হোসেন সেঁজুতির সাথে তাদের প্রতিবেশী আলতাফ হোসেনের ছেলে কলারোয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুর রহমানের এক বছর আগে থেকে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রতিদিন কয়েকবার করে তাদের দু’জনের মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা হতো। ২৭ মার্চ রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে তাদের ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল।
আব্দুর রহমান ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় সেঁজুতির নাম্বারে ফোন করলে তার ফোন সে ব্যস্ত পায়। এতে অন্য কোনো ছেলের সাথে সেঁজুতির সম্পর্ক আছে বলে তার সন্দেহ হয়। এ কারণে সে সেঁজুতির উপর আগে থেকে রেগে ছিল। ২৭ মার্চ রাতে স্কুলে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা বলে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় সেঁজুতি। এ সময় তাদের ঘরের পিছনে গিয়ে আগের সন্ধ্যার ফোনকল কার ছিল তাকে জিজ্ঞাসা করে আব্দুর রহমান। কিন্তু দ্রুত সঠিক উত্তর দিতে না পারায় রহমান সজোরে সেঁজুতিকে ধাক্কা দিলে সে দেয়ালের গায়ে গিয়ে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
সেঁজুতির জ্ঞান ফিরে না আসায় মারা গেছে ভেবে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে একটি ওড়না বের করে তার হাত-পা বেঁধে গ্রামের একটি কুলবাগান সংলগ্ন ধানক্ষেতের ড্রেনে উপুড় করে ফেলে রেখে আসে রহমান।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ স্কুলে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয় সেঁজুতি। পর দিন গ্রামের একটি কুলবাগান সংলগ্ন ধানক্ষেতের ড্রেনে দু’হাত বাঁধা উপুড় করা অবস্থায় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
তাকে ২৭ মার্চ রাতে অন্যত্র শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ওই ড্রেনের উপর ফেলে রাখা হয় মর্মে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা। এ ঘটনায় নিহতের মা লায়লা পারভিন কলারোয়া থানায় একটি মামলা করেন।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দীন মৃধা জানান, গ্রেফতারকৃত আব্দুর রহমান নিজেই তার প্রেমিক সেঁজুতিকে হত্যা করেছে বলে সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম সালাউদ্দিন আহম্মদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply