আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি সত্ত্বেও সাগরপথে মানবপাচার থামানো যাচ্ছে না। গতকাল শনিবার ভোরে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের প্রস্তুতিকালে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া কয়েকটি এলাকা থেকে ২১ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ১২ নারী ও ৯ পুরুষ রয়েছে। তারা সবাই বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দা।
আটককৃত জাহেদা বেগম বলেন, মালয়েশিয়াতে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা মিলে আমাকে স্বামীর কাছে পাঠানোর জন্য দালালের মাধ্যমে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, বৈধপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথেই যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।
জানা যায়, ট্রলারে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানো জন্য পাচারকারীরা কক্সবাজারের উপকূলের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ব্যবহার করছে। এগুলো হলোÑ টেকনাফের শামলাপুর, শীলখালী, রাজারছড়া, নোয়াখালীপাড়া, জাহাজপুরা, শাহপরীর দ্বীপ, কাটাবনিয়া, মিঠাপানির ছড়া, জালিয়াপালং, ইনানী, হিমছড়ি, রেজুখাল, কুতুবদিয়াপাড়া, খুরুশকুল, চৌফলদ-ি ও মহেশখালী। এ ছাড়া সীতাকু- ও মাঝিরঘাট এলাকা হয়েও ট্রলারে মানবপাচার হয়ে থাকে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে স্থানীয়সহ বেশ কয়েক রোহিঙ্গা নেতা। তারা সবাই টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা। এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় অবস্থানকারী মানবপাচারকারী কয়েক রোহিঙ্গার নামও এর সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের (ইনচার্জ) পরিদর্শক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী বলেন, শনিবার ভোরে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বেশ কিছু রোহিঙ্গা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার নেতৃত্বে বাহারছড়া ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা অভিযান চালিয়ে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত নারীরা সবাই অল্পবয়সী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ ফেব্রুয়ারি অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ১৩৮ যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এতে ১৫ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় ৭৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ দালালকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করে কোস্টগার্ড। এ মামলায় এ পর্যন্ত নয়জনকে আটক করে পুলিশ।
Leave a Reply