1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০১ অপরাহ্ন

দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে মুখের পরিচর্যা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০২২

চিকিৎসাবিজ্ঞানে মুখ থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টির নাম হ্যালিটোসিস। এ নিয়ে আক্রান্তদের অনেকের মধ্যেই থাকে হীনমন্যতা বা সংকীর্ণতা। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে এ সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কারণ : মুখের দুর্গন্ধের উৎস হিসেবে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে মুখগহ্বর দায়ী। বহুলাংশে দায়ী জিহ্বা, বিশেষ করে জিহ্বার পেছন দিকের অংশ। জিহ্বার ওপরিভাগ অমসৃণ হওয়ায় সেখানে সহজে খাদ্যকণা জমা হতে পারে। এর সঙ্গে জিহ্বার মৃতকোষ ও ব্যাকটেরিয়া মিলে তৈরি করে ‘বায়োফিল্ম’ নামক আস্তরণ যেখানে বসত গড়ে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া। কিছু ব্যাকটেরিয়া খাবারের প্রোটিন ভেঙে অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরির সময় নির্গত করে উদ্বায়ী সালফার উপাদান যা দুর্গন্ধ তৈরি করে।

মাড়িরোগের কারণে মাড়িতে পকেট বা ফাঁকা সৃষ্টি হলে সেখানে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার ঘটে। গুরুতর ক্ষেত্রে জমা হতে পারে পুঁজ, দেখা দিতে পারে মুখের দুর্গন্ধ। ডেন্টাল ক্যারিজের কারণে সৃষ্ট দাঁতের গভীর গর্তে কিংবা সম্প্রতি দাঁত তোলার ফলে চোয়ালে সৃষ্ট গর্তে ব্যাকটেরিয়া বংশবিস্তার ঘটিয়ে মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে। দুই দাঁতের মধ্যে ফাঁকা তৈরি হলে, দাঁত আঁকাবাঁকা হলে, কোনো দাঁত কাত হয়ে থাকলে, দাঁতে ফিলিংয়ের প্রান্তভাগ অমসৃণ হলে সেখানে খাবার আটকে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার ঘটাতে পারে, ফল হিসেবে মুখের দুর্গন্ধ।

যারা অপসারণযোগ্য কৃত্রিম দাঁত পরেন, সে দাঁত ঘুমানোর সময় খুলে না রাখলে, ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে মুখে দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। কারণ অপসারণযোগ্য কৃত্রিম দাঁতের যে অংশ মাড়ি ও তালুতে বসানো থাকে, তা কিছুটা এবড়ো থ্যাবড়ো, সেখানে খাদ্যকণা আটকে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক বিস্তার ঘটাতে পারে। তা থেকেও হতে পারে মুখে দুর্গন্ধ। মুখে ভাইরাসজনিত ঘা দেখা দিলে, ধূমপান বা মদ্যপানে, মানসিক চাপে, উপবাসকালে, এমনকি নারীদের মেনোপজ চলাকালেও দেখা দিতে পারে মুখে দুর্গন্ধ।

সহজে উদ্বায়ী গ্যাস নির্গত করে এমন খাবার, যেমন- পেঁয়াজ, রসুন, বাঁধাকপি, মুলা ইত্যাদি খেলেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। মুখ গহ্বরে শুষ্কতা সৃষ্টিকারী ওষুধের প্রভাবে মুখে লালা নিঃসরণ কমে গিয়ে জীবাণু বিস্তার ঘটতে পারে, দেখা দিতে পারে মুখের দুর্গন্ধ। মুখগহ্বরের উৎসের বাইরেও নাকের গগ¦র বা ন্যাজাল ক্যাভিটি, সাইনাস, গলা, ফুসফুস, অন্ননালি, পাকস্থলী, কিডনি, লিভার সমস্যার কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।

প্রতিকার : জিহ্বার ওপরিভাগ দিনে দুবার পরিষ্কার করতে হবে। এ জন্য টুথব্রাশ, টাং ক্লিনার, টাং স্ক্র্যাপার ব্যবহার করা যেতে পারে, যা জিহ্বার ওপরের ব্যাকটেরিয়ার আস্তরণ, ময়লা ও শ্লেষ্মা পরিষ্কার করে। একটি চা চামচ উল্টো করে তা দিয়েও জিহ্বা পরিষ্কার করা যায়। স্কেলিং ও রুট প্লেনিং চিকিৎসার মাধ্যমে মাড়ির ভেতরের পাথর এবং দাঁতের শিকড়ের আবরণ বা সিমেন্টাম পরিষ্কারের মাধ্যমে এ সমস্যার উন্নতি হতে পারে।

ঘুমানোর সময় মুখ গহ্বর কর্মহীন হয়ে লালা নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তখন মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কাজ চালিয়ে যেতে পারে নির্বিঘেœ। এ কারণে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখের দুর্গন্ধের তীব্রতা বেশি দেখা দেয়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। ব্যবহার করা যেতে পারে মাউথওয়াশ। মুখের দুর্গন্ধ প্রতিরোধী উপাদানসমৃদ্ধ চুইংগাম চিবালেও ফল পাওয়া যায়। যারা মুখে অপসারণযোগ্য বাঁধাই করা দাঁত পরেন, তারা এ দাঁত নিয়মিত পরিষ্কার রাখবেন। ঘুমানোর সময় বাঁধাই করা দাঁত না পরে জীবাণুবিরোধী তরলে ডুবিয়ে রাখবেন। মুখের দুর্গন্ধ রোধে নিয়মিত জিহ্বা পরিষ্কার করা, দাঁত ব্রাশ করা, দাঁতের সুতা বা ফ্লোশ দিয়ে দুই দাঁতের ফাঁকা পরিষ্কার রাখা, মাঝেমধ্যে ডেন্টাল সার্জনের মাধ্যমে দাঁত ও মুখ গহ্বর পরীক্ষা করানো ভালো।

লেখক : ডেন্টাল স্পেশালিস্ট, তায়েফ ডেন্টাল হাসপাতাল, সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com