1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

১৪১৫ প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

নড়াইল, যশোরের কেশবপুর, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও ধর্মপাশা এবং সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক মিলে ১ হাজার ৪১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

নড়াইল : নড়াইলে ৪৫টি মাদ্রাসার একটিতেও শহীদ মিনার নেই। তবে দোয়া ও আলোচনাসভার মধ্যদিয়ে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয় বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। জেলায় মোট ৬৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি মাদ্রাসাসহ ৪৫৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।

এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বলেন, আমরা দোয়া ও আলোচনাসভার মধ্যদিয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকি। শরিয়তে শহীদ মিনার নির্মাণের বিধান নেই।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম ছায়েদুর রহমান বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেগুলোর তালিকা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রতিবছরই পাঠানো হয়। তবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে প্রতিবছর ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করে দেওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় সহায়তা এবং জেলা পরিষদ ও এলজিইডি অফিস থেকেও প্রতিবছর দুই-একটি করে শহীদ মিনার তৈরি হচ্ছে বলে জানান।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে একই নকশায় সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।

নড়াইল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অরুনাভ রায় জানান, আমাদের কাছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার কাজের জন্য মাউশি এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি খাতে দুটি ভাগে বরাদ্দ আসে। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ আসে, সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা যদি শহীদ মিনার তৈরি করে দিতে বলেন, তা হলে আমরা তৈরি করে দেই। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে নড়াইলে যোগদানের পর কালিয়া উপজেলার একটি মাধ্যমিক স্কুলে নতুন শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

কেশবপুর (যশোর) : ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছর ও স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও উপজেলার ৩২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৫৯টিতে শহীদ মিনার আছে। বাকিগুলো নিয়ে ভাষার মাস এলেই কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। তবে তা খাতা-কলমে সীমাবদ্ধ। গত এক বছরে নির্মাণ করা হয়েছে মাত্র ২টি শহীদ মিনার।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যামিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেখানে দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণ করতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম আরাফাত হোসেন বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেগুলোর ব্যাপারে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিতে বলেছি।

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) : সাদুল্লাপুর উপজেলার শতকরা ৮৫ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ৭টি, ৬৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ৩১টি এবং ১৪টি কলেজের মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ৮টি। তবে ৪১টি মাদ্রাসার কোনোটিতেই শহীদ মিনার নেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিশ শাফি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ পাই না।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এইসএম মাহবুবুল ইসলাম জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ সংশ্নিষ্ট কাজ দেখেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। আমরা বিষয়টি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাব।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী কামরুল হাসান রনি জানান, সরকারিভাবে বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের নির্দেশনা থাকে না। নির্দেশনা পেলেই দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) : উপজেলায় ১৩৪টি সরকারি প্রাথমিক, ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি কলেজ ও ২টি মাদ্রাসা আছে। কোনো মাদ্রাসাতেই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। শুধু ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। এর মধ্যে বাদাঘাট, জনতা, বীরেন্দ্রনগর, ট্যাকেরঘাট, বালিজুরী ও আনোয়ারপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকলেও সেগুলোও আছে জরাজীর্ণ অবস্থায়।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, ভাষাশহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন করা খুবই প্রয়োজন। এই বিষয়ে আমার পক্ষ থেকে দায়িত্বশীদের সঙ্গে কথা বলব।

ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) : ধর্মপাশা (মধ্যনগর) উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পর্যায়ের ১৯৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার নেই। ফলে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও জাতীয় শহীদ দিবসে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে বাঁশ, কাঠ ও কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। আবার উপজেলা সদর তার আশপাশের প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে স্থানীয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। হাওরাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জায়গা ও আর্থিক সংকটের কারণে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে ওঠেনি। ফলে সব শিক্ষার্থীর মাঝে প্রভাতফেরি ও শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোসহ ২১-এর চেতনা বিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির হাসান বলেন, ‘যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেগুলো থেকে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে উপজেলা প্রশাসন থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) : ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পরও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সরকারি বেসরকারি ১৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। এর মধ্যে ৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০টি মাদ্রাসা, ৫টি কারিগরি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তাড়াশ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম জানান, প্রাথমিক স্তরের যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেগুলোয় পর্যায়ক্রমে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ চলছে। গত অর্থবছরে ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। এ বছরও আরও ৫টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে।

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা): নাঙ্গলকোটে হাছান মেমোরিয়াল সরকারি অনার্স কলেজ ও মডেল মহিলা কলেজেও নেই শহীদ মিনার। উপজেলায় ২৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক। বিষয়টি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com