২৮ দিন পর আজ সোমবার খুলেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) হল। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে অনলাইনে ক্লাস। উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে শাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন হল খুলে দেওয়া ও অনলাইন ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘করোনার কারণে এখন সশরীরে ক্লাস হবে না। তবে সরকারি কোনো বিধিনিষেধ না থাকলে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে।’
গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ১৫ জানুয়ারি ছাত্রলীগ হামলা চালায়। পরের দিন ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং তাদের ওপর শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে আন্দোলনটি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
প্রথম ছয় দিনে দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। ২৬ জানুয়ারি সকালে অনশনস্থলে এসে লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। তবে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙলেও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিলেন।
এর ২৬ দিনের মাথায় গত শুক্রবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেদিন শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এমনকি অনেক দাবি এরই মধ্যে মেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানান। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি রাষ্ট্রপতিকে বিষয়টি জানাবেন বলে জানান।
একই দিন শিক্ষামন্ত্রী শাবিপ্রবিতে গিয়ে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে উপাচার্যকে দুঃখপ্রকাশের পারামর্শ দেন।
এরই মধ্যে গত শনিবার উপাচার্য দুঃখপ্রকাশ করেন। একই দিন সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। সেইসঙ্গে গতকাল রোববার থেকেই ক্লাস শুরুর আহ্বান জানান তারা। এরপর গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।
Leave a Reply