পথটি দিয়ে চার যুগের বেশি সময় হাঁটাচলা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাদের প্রতিপক্ষের লোক মনে করে চলাচলের পথে ইটের দেয়াল তুলে দিয়েছেন। এ কারণে বাসিন্দারা পড়েছেন ভোগান্তিতে। ঘটনা বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের কেশবপুর কলেজ এলাকার। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের নাম মো. সালেহ উদ্দিন পিকু। তিনি কেশবপুর কলেজের অধ্যক্ষ ও একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কেশবপুর কলেজের মূল ভবনের পূর্বপাশে অধ্যক্ষের বাসভবন। ভবনের দক্ষিণ পাশ দিয়ে স্থানীয়দের চলাচলের জন্য একটি পথ রয়েছে। ওই পথ দিয়ে চার যুগের বেশি সময় ধরে হাঁটাচলা করেন কলেজের পাশের হাজারী হাওলাদার বাড়ির লোকজন। এই বাড়িতে রয়েছে ১৫টির মতো বসতঘর। ওই বাড়ির সামনের মূল সড়কের মুখে কলেজের বাউন্ডারি ঘেঁষে গত রবিবার ইটের দেয়াল দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে দেন কলেজের অধ্যক্ষ ও ইউপি চেয়ারম্যান সাহেল উদ্দিন পিকু। কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালের ১০ মার্চ কলেজে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হানিফ মিয়ার উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়- হাজারী হাওলাদার বাড়ির লোকজনদের চলাচলের জন্য কলেজ মাঠ ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি, বন্ধ করে দিলে বিষয়টি অমানবিক দেখায়। তাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ওই বাড়ির লোকজনকে ওই পথে চলাচল করার অনুমতি দেওয়া হয়। বিনিময়ে ৭ শতাংশ জমি (স্থানীয় মাপ) ওই বাড়ির পক্ষ থেকে কলেজকে দেওয়া হয়, যা রেজুলেশন আকারে রয়েছে।
হাজারী হাওলাদার বাড়ির বাসিন্দা জহির উদ্দিন মাস্টার বলেন, আমাদের বাড়ির লোকজন কেশবপুর কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় জমি দান করেন। ওই জমিতে কলেজ প্রতিষ্ঠার আগে চলাচলের রাস্তা ছিল। কিন্তু কলেজ প্রতিষ্ঠার পর রাস্তাটি মাঠের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের যাতায়তের সুবিধার জন্য কলেজ বাউন্ডারির একটি দেয়াল খোলা রাখা হয়েছিল। দীর্ঘ বছর পর কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ বাউন্ডারি দেয়ালের ওই ফাঁকা জায়গাটুকু ইটের গাঁথুনি দিয়ে আটকে দেন কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ ও ইউপি চেয়ারম্যান সালেউদ্দিন পিকু।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ সালেউদ্দিন পিকু বলেন, কলেজের স্বার্থে বাউন্ডারির ফাঁকা অংশটুকু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাজারী বাড়ির লোকজনের চলাচলের জন্য বিকল্প পথ রয়েছে। তারা সেই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারেন। দীর্ঘ বছর পর কেন পথটি বন্ধ করে দিলেন? জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘তারা সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুর লোক। লাভলু আমার দুই ভাইয়ের খুনি। আমি যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন পর্যন্ত আমার ভাইয়ের খুনিদের সঙ্গে ভালো আচরণ করার সুযোগ নেই।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, ‘যদি তাদের সঙ্গে কোনো চুক্তি বা রেজুলেশন থাকে, তাহলে রাস্তা বন্ধ করার কোনো এখতিয়ার কলেজ কর্তৃপক্ষের নেই। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply