ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান উত্তেজনা বাড়ায় পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ নির্দেশ দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার অভিযান শুরু হওয়ার পর কোনো মার্কিন নাগরিক যদি ইউক্রেনে আটকা পড়ে তবে তাকে উদ্ধার করতে সেখানে সেনা পাঠাবেন না তিনি।
এদিকে, আজ শনিবার বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখোর সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ফোনালাপের কথা রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখেরও বেশি সেনা সমাবেশ ঘটানো সত্ত্বেও রাশিয়া বলে আসছে, ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তবে দিন দিন উত্তেজনা বাড়তে থাকায় যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, লাটভিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউজিল্যান্ড তাদের নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অপরদিকে, পশ্চিমা দেশগুলো মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান বলেছেন, ‘রাশিয়ার বাহিনীগুলো এখন একটি বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো অবস্থানে আছে। কী হতে যাচ্ছে তা নির্দিষ্টভাবে জানি না আমরা, কিন্তু ঝুঁকি এখন খুব বেশি এবং আসন্ন হুমকির মুখে অবিলম্বে (ইউক্রেন) ছেড়ে আসাই বিচক্ষণ হবে।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন কি না, তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ‘জানে না’ বলে জানিয়েছেন সালিভান। কিন্তু তিনি বলেছেন, ক্রেমলিন সামরিক অভিযান চালানোর অজুহাত খুঁজছে এবং আকাশপথে ব্যাপক বোমা বর্ষণের মধ্য দিয়ে তা শুরু হতে পারে।
গত সপ্তাহে ইউক্রেইনের সীমান্তে রাশিয়ার আরও সেনা মোতায়েন ও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কৃষ্ণ সাগরে সামরিক মহড়া শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সতর্ক করার পর সালিভান এসব মন্তব্য করলেন।
এদিকে, শুক্রবার এক ভিডিও কলে আটলান্টিকের দুই পারের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাইডেন। এই আলোচনায় তারা একমত হয়েছেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালায় তবে দেশটিকে গুরুতর অর্থনৈতিক পরিণতির মুখোমুখি করতে তারা সমন্বিত পদক্ষেপ নেবেন।
এর মধ্যে পোল্যান্ডে আরও তিন হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব সেনা আগামী সপ্তাহেই পোল্যান্ডে হাজির হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা ইউক্রেনে লড়াই করবে না কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেইন যাতে নেটোতে যোগ না দেয়, তা নিশ্চিত করতেই ‘রেড লাইন’ প্রয়োগ করতে চায় রাশিয়া।
Leave a Reply