বরিশাল বিমানবন্দরে ১৫টি ত্রুটি চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) গঠিত পরিদর্শন কমিটি। বিমানের নিরাপদ অবতরণের স্বার্থে যত দ্রুত সম্ভব এসব ত্রুটি দূর করার সুপারিশও করেছে কমিটি। এ ছাড়া পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপককে এসব সমস্যা সমাধানের কর্মপরিকল্পনা দিতে বলেছে পরিদর্শন কমিটি।
ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড রেগুলেশন বিভাগের পরিচালক গ্রুপে ক্যাপ্টেন মো. মুকিত উল আলম মিয়া স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনটি গত ২৪ জানুয়ারি বরিশাল বিমানবন্দরের ম্যানেজার বরাবর পাঠানো হয়। ‘ইন্সপেকশন রিপোর্ট অব বরিশাল এয়ারপোর্ট’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরের ‘এয়ারড্রোম ম্যানুয়াল’ খুঁজে পাওয়া যায়নি। কমিটি সিভিল অ্যাভিয়েশন অ্যাক্ট ২০১৭-এর সেকশন-৩ অনুযায়ী সেটা স্থাপন করতে বলেছে। বিমানবন্দরের ‘ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার’ (ইওসি), ‘আইসোলেটেড এয়ারক্রাফট পার্কিং বে’, ‘এয়ারড্রোম ফুল স্কেল ফায়ার ড্রিল’, ‘ডিজঅ্যাভল এয়ারক্রাফট রিমোভাল প্ল্যান’, ‘রানওয়ে টিএইচআর ও সেন্ট্রাল লাইন মার্কিং’ কিংবা ‘অ্যাপ্রোন মার্কিং’ কোনোটাই খুঁজে পাওয়া যায়নি। পর্যবেক্ষণ কমিটি সিভিল অ্যাভিয়েশন অনুমোদিত বিধি অনুযায়ী সেগুলো স্থাপনের সুপারিশ করেছে।
এ ব্যাপারে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘বরিশাল বিমানবন্দরসহ দেশের সব অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তাসংক্রান্ত ত্রুটিসমূহ মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে কমিটির পরিদর্শকরা বরিশাল বিমানবন্দর রানওয়ের ‘সেন্টার লাইন’ থেকে ‘আরডব্লিউওয়াই সাইড স্ট্রিপ’ খুঁজে পায়নি। কমিটি বলছে, রানওয়ের পাশের ঘাস বড় হয়ে আরডব্লিউওয়াই সাইড স্ট্রিপগুলো ঢাকা পড়ে গেছে। আরডব্লিউওয়াই স্ট্রিপ ও আরইএসএ গ্রেড অনুযায়ী নেই। সিঙ্গেল লাইন ল্যাম্প নেই। প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ বিষয় অন্তর্র্ভুক্ত নেই। প্রয়োজনীয় গামবুট ও হেলমেটও পাওয়া যায়নি। বিমাবন্দরের নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙে গেছে। বিমানবন্দরের চারদিকের নিরাপত্তামূলক বাতিগুলো পড়ে আছে অকার্যকর অবস্থায়।
পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন কমিটি বলেছে, একটি কার্যকর এয়ারফিল্ডের জন্য এগুলো অবিলম্বে সমাধান করতে হবে। এগুলো সমাধান হলে বরিশাল বিমানবন্দরে উড়োজাহাজের নিরাপত্তা বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিমানবন্দরে এখন প্রতিদিন চারটি ফ্লাইট ওঠানামা করে। প্রশিক্ষণ ও সামরিক বাহিনীর উড়োজাহাজও ওঠানামা করে। দেয়ালের বিভিন্ন অংশ ভাঙা। আবার দেয়ালের নিচের অংশে মাটি না থাকায় ফাঁকা হয়ে পড়েছে। বরিশালের বাবুগঞ্জে ২৬ বছর আগে গড়ে ওঠে এই বিমানবন্দর।
পরিদর্শন কমিটির সদস্য হিসেবে ছিলেন সিনিয়র এজিএ পরিদর্শক মো. আয়ুব খান, এজিএ পরিদর্শক ও পরামর্শক তপন কুমার ঘোষ এবং এজিএ সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল লতিফ। কমিটির সদস্যরা গত ৭ ও ৮ জানুয়ারি সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে।
Leave a Reply