1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন

হাসপাতালে টিকাকেন্দ্র বাড়ছে ঝুঁকি

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ টিকা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে রাজধানীর অধিকাংশ হাসপাতালেই উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। এতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। এ ছাড়া কোভিড টিকা কেন্দ্রের প্রায় সবাই বিভিন্ন হাসপাতালে। এসব কেন্দ্রে এসেও সুস্থ মানুষরা সংক্রমণ ঝুঁকিতে পড়ছেন। গতকাল সরজমিন রাজধানীর কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে স্বাস্থ্যবিধির বেহাল চিত্র দেখা গেছে।

হাসপাতালে সকাল থেকে টিকা নিতে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইনে ভেঙে পড়ে স্বাস্থ্যবিধি।

অনেকের মুখে মাস্ক পরা থাকলেও তা সঠিক নিয়মে থাকে না। থুঁতনির নিচে বা হাতে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখেন অনেকে। এ ছাড়া অনেক হাসপাতালে করোনার নমুনা নেয়ার পাশাপাশি চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে। জ্বর, ঠাণ্ডা নিয়েও  রোগীরা ভিড় জমাচ্ছেন। হাসপাতালে সব ধরনের রোগীদের উপচে পড়া ভিড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন সেবাগ্রহীতারা। এদিকে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিদেশগামী যাত্রীরাও টিকার প্রথম ডোজ নিতে এসে শঙ্কা প্রকাশ করছেন। তাদের অভিযোগ, বিদেশ যাওয়ার জন্য ফাইজারের টিকা দিতে ঢাকা এসেছেন। কিন্তু প্রথম ডোজে সবাইকে সিনোভ্যাক টিকা দেয়া হচ্ছে। তবে যারা প্রথম ডোজে ফাইজারের টিকা নিয়েছেন তাদের সবাইকে এই টিকাই দেয়া হচ্ছে।

নরসিংদীর মনোহরদী থেকে সকাল ৯টায় শাশুড়িকে নিয়ে প্রথম ডোজের টিকা নিতে  সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন মো. বায়েজিদ। তার শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘মনোহরদি থেকে ফজরের সময় রওনা দিয়ে সকাল ৯টায় আসছি। লাইনে দাঁড়ানোর অনেকক্ষণ পর বলছে ফাইজারের টিকা নাই। আরেকটা দিবে। সেটা দিলে তো সৌদি আরব যাইতে পারবো না। এখন ফাইজারের টিকা না দিলে আমাগো ভিসা মাইর যাইবো।
মঙ্গলবার ঢাকার দুই সিটিতে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ হিসেবে সিনোভ্যাক এবং বুস্টার ডোজ হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং মডার্নার টিকা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যা গতকাল থেকে এসব হাসপাতালগুলোতে কার্যকর হতে দেখা গেছে। ফলে বিদেশগামী যাত্রীদের ক্ষেত্রেও প্রথম ডোজ হিসেবে সিনোভ্যাক টিকাই দেয়া হচ্ছে।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এসে টিকা দেয়ার ব্যবস্থাপনা নিয়ে উষ্মা জানিয়েছেন অনেকেই। তারা বলছেন,  ডোজ অনুযায়ী তিনটা লাইন করানো হলে গাদাগাদি কম হতো। কিন্তু এখানে সবাইকে একই লাইনে দাঁড় করানো হয়েছে। এতে অনেক সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি ব্যাহত হচ্ছে। এখান থেকেই করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়।

টিকা দিতে আসা মো. রিপন বলেন, ‘সবাইকে এক লাইনেই দাঁড় করানো হয়েছে। যদি প্রথম ডোজ, দ্বিতীয় ডোজ আর বুস্টার ডোজের জন্য আলাদা লাইন রাখতো তাহলে এত ভিড় হতো না। মানুষের মধ্যে দূরত্ব থাকতো। এতে স্বাস্থ্যবিধি মানা যাচ্ছে না। এর আগে টিকা দিয়ে গেছি ৫-৭ মিনিট সময় লাগছে। আজকে ২-৩ ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি।’

এসব বিষয়ে কথা হয় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. খলিলুর রহমানের সঙ্গে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, ‘এখন ফাইজারের টিকা বন্ধ রয়েছে। এটা ডিজি অফিস থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজকে থেকে প্রথম ডোজ সিনোভ্যাক ও বুস্টার ডোজ মডার্না দেয়া হচ্ছে। যারা প্রথম ডোজ ফাইজার পেয়েছে শুধু তারাই ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজ পাচ্ছে।’

হাসপাতালটিতে প্রতিদিন তিন হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সক্ষমতার মধ্যে আমরা টিকা দিচ্ছি। টিকা নিতে আসা মানুষদের কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। চাইলেও আমরা আরও বুথ বাড়াতে পারবো না। আমাদের নার্সদের ওয়ার্ড ফেলে বুথে বসাতে পারবো না। রোগীদেরও সেবা দিতে হয় আমাদের। নয়তো অন্য রোগীদের  সেবা দেয়া কঠিন হবে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালে সন্তানের জন্য করোনার নমুনা দিতে এসেছেন রাবেয়া আক্তার। সন্তান কিংবা তার মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। করোনার নমুনা দিতে এসেও কেন মাস্ক পরেননি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দম আটকে থাকে। তাই মাত্র খুলেছি। সারাক্ষণ তো মাস্ক পরে থাকা যায় না।’ সন্তানের নমুনা দিতে আসা অন্য অভিভাবকরাও নিরাপদ দূরত্ব না মেনে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন।

অন্য হাসপাতালের চেয়ে এখানকার টিকাকেন্দ্রে কিছুটা ভিড় কম দেখা গেছে। কিন্তু তাতেও মানুষ গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছে। রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একই চিত্র দেখা গেছে।

করোনার উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও ওমিক্রণ ঠেকাতে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ডাক্তারের চেম্বার থেকেই সংক্রমণ বেশি হয়। এতে চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে হাসপাতালে কম রোগ ভর্তি হলেও সেবা প্রদানকারীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তাই হাসপাতাল, ডাক্তার চেম্বার, ল্যাবরেটরি এসব জায়গায় যেন সংক্রমণ প্রতিরোধী সব ধরনের ব্যবস্থা থাকে কর্তৃপক্ষকে এটি নিশ্চিত করতে হবে। এখানে টাকা খরচ করতে হবে। জনবল প্রয়োজন হবে। হাসপাতালে যারাই ঢুকবে তাদেরকে নতুন একটি মাস্ক পরিয়ে দেয়া উচিত। সাবান দিয়ে হাত দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে যেটা আগে ছিল। হাসপাতালের ভেতরের জায়গাগুলো আরও বড় করা যেন সেখানে ভিড় না জমে। এ ছাড়া অন্যসব প্রতিষ্ঠানেও এসব ব্যবস্থা করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com