বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ১৭তম নির্বাচন ঘিরে চলচ্চিত্রের আঁতুর ঘর বিএফডিসিতে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৮ জানুয়ারি সমিতির ২০২২-২০২৪ সালের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর আগেই নির্বাচনের একটি প্যানেলকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কারণ গতকাল সোমবার কেরানীগঞ্জ থেকে নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের পর, একদল কথা রটায়- ১৮৪ জন চলচ্চিত্র শিল্পী ভোটাধিকার হারানোর তালিকায় ছিল শিমুও। আর জায়েদ খানের সঙ্গে একাধিকবার দ্বন্দ্বেও জড়িয়েছেন তিনি। তাই এই অভিনেত্রীর হত্যাকাণ্ডের পেছনে জায়েদ খানের হাত থাকতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়ানো হচ্ছে।
বিষয়টি জায়েদ খানের কানে আসলে মধ্যরাতেই লাইভে আসেন তিনি। সেখানে বলেন, ‘একদল লোক আছে যারা সুন্দর একটি নির্বাচনকে কলঙ্কিত করতে চাচ্ছে। এরা সবখানে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে! একটা হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার বিচার চাইবে কি, সেটা নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচনে আমাকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে। আমি চাই প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করা হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই বলে বেড়াচ্ছে, শিমুর সঙ্গে নাকি আমার ১২ তারিখ ঝগড়া হয়েছে। অথচ বিশ্বাস করুন, বিগত দুই বছর আমার সঙ্গে তার কোনো কথাই হয়নি। এমনকি সামনাসামনি দেখাও হয়নি। অথচ মানুষ এসব মিথ্যে বলে আমাদের সুনাম নষ্ট করছে।’
মধ্যরাতের সেই লাইভে শিমুর ভাই শহিদুল ইসলাম খোকনও ছিল। তিনি জানান, সোমবার সন্ধ্যায় শিমুর খোঁজ না পেয়ে জায়েদ খানের কাছেই ছুটে গিয়েছিলেন শিমুর ভাই। পরে জায়েদ খান সহযোগিতা করেন শিমুর খোঁজ পেতে। শিমুর পরিবারও বলছে, জায়েদের বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ নেই।
তার ভাষ্য, আমরা জিডি করেছিলাম কলাবাগান থানায়। কিন্তু মামলা হয়েছে কেরানীগঞ্জ থানায়। আমি নিজে মামলার বাদী। আসামিদের রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি একজন আমার বোন জামাই, তার বন্ধু ও তার গাড়ির ড্রাইভার। গাড়ির পেছনে রক্তমাখা ছিল। আর আমার বোনের মৃতদেহ যে জামা পড়া অবস্থায় পাওয়া গেছে, সে কখনই এ ধরনের পোশাক পরে না। আমি আমার বোনের মৃত্যুর বিচার চাই।’
এদিকে পুলিশের কাছে শিমুকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে তার স্বামী সাখাওয়াত আলীম নোবেল। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতভর জেরার পর দায় স্বীকার করে নোবেল।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার কেরানীগঞ্জ হযরতপুর ব্রিজের পাশ থেকে বস্তাবন্দি চিত্রনায়িকা শিমুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। এদিন রাতেই শিমুর পরিবার মর্গে তার মরদেহ শনাক্ত করে।
১৯৯৮ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় তার অভিষেক হয়। একে একে অভিনয় করেছেন ৫০টিরও বেশি নাটকে। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবেও দর্শকরা তাকে পর্দায় পেয়েছে। ২৩টি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছিলেন বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছেন শিমু। সর্বশেষ একটি বেসরকারি টিভিতে মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি টুকটাক অভিনয়ও চালিয়ে যেতেন।
Leave a Reply