রাজনীতি ও পেশীশক্তির কাছে অসহায় ভোটাররা। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট কোনো কোনো কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে এজেন্টের সামনে দিতে হচ্ছে ভোটারদের। তবে মেম্বার পদে ভোট গোপন বুথে গিয়ে দিতে পারছেন তারা। আক্ষেপেরে সাথে এমন অভিযোগ মশাখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রের ভোটারদের।
ভোটাররা বলছেন, ভোট সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ হচ্ছে, এজেন্টদের পছন্দের চেয়ারম্যান পদে ভোট নিজেই দিতে পারছি। তবে আমাদের পছন্দে না। অন্যদিকে প্রতিপক্ষীয় এজেন্টদের থাকতে দেয়া হচ্ছে না। এসব অভিযোগে চার ঘণ্টা পর আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী একেএম ফেরদৌস আলম ভোট বর্জন করেন।
বলদী ফজলুল হক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ৬২ নং মুখী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পল্লী সেবক মুখী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের এই অভিযোগসমূহ অস্বীকার করলেন সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা। তবে পোলিং এজেন্ট ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে চুপ ছিলেন বলদী কেন্দ্রের নির্বাচনী কর্মকর্তা।
বুধবার সকালে ভোট শুরুর পর বলদীর ওই কেন্দ্রের ১ ও ২ নম্বর মহিলা বুথে এই চিত্র দেখা যায়। এই দুই বুথে সর্বমোট ভোটার রয়েছেন ৮৬১ জন।
ভোটারদের অভিযোগ, পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে তারা ভোট দিতে পারছেন না। নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট ও কর্মীরা চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালট নিয়ে নিজেরাই ভোট দিচ্ছেন। তারা কেবল মেম্বার প্রার্থী ব্যালটে ভোট দিতে পারছেন নিজের পছন্দে।
অভিযোগের বিষয়ে কথা হলে মো: এলাহী বলেন, ‘অনেক ভোটার ভোট দিতে না পারায় তাদের সহযোগিতা করছি।’ প্রায় একই সুরে কথা বলেন আশরাফুলও।
অন্যদিকে বদলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ নম্বর বুথে (পুরুষ) ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য দাবি করা মনির হোসেন নিজেই সিল মারছেন নৌকা প্রতীকে।
বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো: মোস্তফা কামাল মনি বলেন, ‘এটা আওয়ামী অধ্যুষিত এলাকা। ৮০ ভাগ ভোটার নৌকার। ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। ভোটাররা নিজেই ব্যালেটে ভোট দিচ্ছেন।’
ইউনিয়নে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফেরদৌস আলম সকালে সাংবাদিকদের বলেন, আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা হচ্ছে। ভোটাররা শুধু মেম্বারের ভোট দিতে পারছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
বলদি কেন্দ্রের পাশে আবুল হোসেন, জব্বর মাতবর, আনোয়ার হোসেন, রাহেলা খাতুনের সাথে কথা হলে তারা ক্ষোভের সাথে বলেন, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে, কারণ ভোট দিতে পারতেছি। আগে তো কেন্দ্রে গেলেই বলতো ভোট হয়ে গেছে। এবার চেয়ারম্যানের এজেন্টদের সামনে নৌকায় ভোট দিতে হচ্ছে। মেম্বার পদে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলাম।
মুখি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রিজাইজিং অফিসার শাহ মো: কামরুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে আনারসের কোনো এজেন্ট আসেনি। তবে মেম্বারের সবাই আছে। তারা না এলে আমি কী করবো?
প্রিজাইডিং অফিসার মো: রুহুল আমিন বলেন, আমার কাছে অভিযোগ আসার পর আনারস প্রতীকের এজেন্টদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কোথাও কোনো সমস্যা নেই।
Leave a Reply