দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতেই রাজধানীতে বাড়তে থাকে শীতের প্রকোপ। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় কনকনে শীত। এমন পরিবেশে শীতের পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। ব্যস্ত এ শহরে বাসায় পিঠা তৈরি করতে অনেকের সময় নেই। তাই শীতের বিকাল কিংবা সন্ধ্যার হিমেল হাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে পিঠা খেতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকানগুলোতে।
অনেকে পরিবার নিয়ে ছুটছেন অভিজাত এলাকার পরিপাটি পিঠার দোকানে। আবার ডিজিটাল সুবিধাকেও কাজে লাগাচ্ছেন অনেকে। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে বাসায় বসেই পরিবারের সঙ্গে শীতের পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন।
রাজধানীবাসীর শীতের পিঠার চাহিদাকে কেন্দ্র করে অলিগলিতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পিঠাপুলির দোকান। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে অনেকে মৌসুমি পেশা হিসাবে সড়কের পাশে অস্থায়ীভাবে পিঠা বিক্রি করছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, গরম গরম ভাপা পিঠা নামছে মাটির চুলা থেকে। ক্রেতারা সারিবদ্ধ হয়ে পিঠা কিনছেন। কেউ নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। কোনো চুলায় ভাপাপিঠা, কোনোটিতে চিতই, কোনোটিতে ডিম বা অন্য কোনো পিঠা। শীত যতই বাড়ছে এসব পিঠাপুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। দোকানগুলোয় পিঠার পাশাপাশি থাকছে হরেক রকম ভর্তা।
প্রতিদিন বিকাল থেকেই পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে সড়কের পাশে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা দোকানগুলোয়। সন্ধ্যা হলেই বেড়ে যায় ক্রেতা সমাগম, যা মধ্যরাত পর্যন্ত থাকে। রসুন-মরিচবাটা, ধনিয়াপাতা বাটা, শুঁটকি, কালোজিরা, সর্ষে ভর্তাসহ নানা রকম উপকরণ মিলিয়ে বিক্রি করা হয় চিতই পিঠা।
এর মধ্যে ভাপা আর চিতই পিঠার কদর বেশি। প্রতিটি বিক্রি হয় পাঁচ থেকে ১০ টাকা করে। এছাড়া অভিজাত এলাকায় গড়ে ওঠা পিঠার দোকানে পাওয়া যাচ্ছে পুলি, ভাপা, তেলের পিঠা, পাটিসাপটাসহ হরেক রকম আইটেম।
মিরপুর ৬ নাম্বার কাঁচাবাজার এলাকার এক পিঠা বিক্রেতা বলেন, বছরের এই সময়টা শীতকালীন পিঠার বিক্রি বেশি হয়। বর্তমানে চিতই, ভাপা, বরাপিঠা, পাটিসাপটাসহ পাঁচ থেকে সাত ধরনের পিঠা তৈরি করছেন। আর চিতই ও ভাপা পিঠা খাওয়ার জন্য থাকছে নারকেল গুড়সহ বাহারি পদের ভর্তা। লাভও ভালো। সেখানে গরম চিতই পিঠার জন্য অপেক্ষমান রায়হান নামে এক তরুণ জানান, শীতে চুলার পাশে বসে পিঠা খাওয়ার যে ছবি আমাদের চোখে ভেসে ওঠে, নগর জীবনে তার দেখা মিলবে কই। এরা আছে বলে একটু পিঠা খাওয়ার সুযোগ হয়।
Leave a Reply