বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের উত্তর বড়মগরা গ্রামে দীর্ঘদিনের পুরনো একমাত্র রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে চলার পথ বন্ধ করে দেওয়ায় তিন মাস ধরে পাঁচটি পরিবারের অর্ধশতাধিক লোক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে অবরুদ্ধ পরিবারগুলো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের উত্তর বড়মগরা গ্রামের মৃত আদিত্য বাগচীর ছেলে বাসুদেব বাগচীসহ ৫টি পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে একই বাড়ির মৃত সতিশ বাগচীর ছেলে সচিন বাগচী, সুনিল বাগচী ও সুধীর বাগচী।
অবরুদ্ধ হওয়া পরিবারগুলো প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো সুফল পায়নি। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ওই গ্রামের ৫টি পরিবারসহ আশপাশের গ্রামের মানুষ চলাচলে দুর্ভোগে পড়ছেন। স্থানীয় গণ্যমান্য ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া সত্ত্বেও রাস্তাটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করতে না পারায় গ্রামবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ।
সরেজমিন দেখা গেছে, বড়মগড়া থেকে কোদালধোয়া যাওয়ার পাকা রাস্তার সঙ্গে বাসুদেব বাগচীর বাড়িতে যাতায়াতের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ সচিন বাগচী, সুনিল বাগচী ও সুধীর বাগচী।
অবরুদ্ধ হওয়া বাসুদেব বাগচী জানান, আমাদের বাড়িতে যাতায়াতের জন্য দীর্ঘদিনের পুরোনো একমাত্র রাস্তাটি গত তিন মাস ধরে বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। চলাচলের এ পথ বন্ধ করায় আমাদের ৫ পরিবারের অর্ধশতাধিক লোক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণে আমাদের বাড়ির কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার অথবা হাসপাতালে নিতে পারছি না।
অবরুদ্ধ হওয়া পরিবারের সদস্য গৃহবধূ শেফালী বাগচী জানান, ‘প্রতিপক্ষের সচিন বাগচী ও তাদের ভাই সুনিল, সুধীর বাগচীর সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে আমাদের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে তারা। আমাদের বাড়ির শিক্ষার্থী, শিশু-বৃদ্ধরা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। পাশের অন্য বাড়ির জায়গা দিয়ে কোনো মতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের বের হতে হচ্ছে। গত তিন মাস যাবৎ স্থানীয় মেম্বর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বারবার যাওয়া সত্ত্বেও কোনো সমাধান পাইনি আমরা।’
অভিযুক্ত সুনীল বাগচী জানান, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের বাড়ির জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। তারা আমাদের বাড়িতে চলাচলের জন্য রাস্তা দিলেও কোনো ভ্যান গাড়িও নেওয়া যায় না। তারা বাড়ির ভিতরের রাস্তা চলাচলের জন্য ঠিক করে না দিলে তাদের চলাচলের জন্যও বাঁশের বেড়া খুলে দেওয়া হবে না।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য অজিত কুমার শিকারী জানান, দুই পক্ষের জায়গা নিয়ে বিরোধ ও চলাচলের রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে কয়েক দফা সমাধানের চেষ্টা করেও আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এ কারণে ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেম বলেন, বাড়িতে যাতায়াতের জন্য রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখায় একটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply