বজ্রপাতে দিনাজপুর ও সুনামগঞ্জে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দিনাজপুরে দুটি পৃথক ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সাতজনের আর সুনামগঞ্জে মারা গেছেন দুই সহোদর ভাই।
সোমবার বিকেলে এসব বজ্রপাত হয়।
আমাদের দিনাজপুর সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরে প্রবল বর্ষণ ও বৃষ্টিপাতের সময় বজ্রপাতে দিনাজপুর সদর ও চিরিবন্দর উপজেলায় মোট সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় দিনাজপুর শহরের ৮ নম্বর উপশহর এলাকার খেলার মাঠের পাশে গাছের নিচে মাচায় বসে পাঁচ থেকে সাতজন কিশোর মোবাইলে গেম খেলছিল। এ সময় বজ্রপাত ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়।
এ সময় আহত হয় আরো তিনজন। আহতরা দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মৃতরা হলো- সাদিকুলের ছেলে আপন (১৬), আমিনুল ইসলামের ছেলে সাজ্জাদ (১৩), মৃত সিদ্দিকের ছেলে হাসান (১২) ও মিম (১২)। তার বাবা রাজু মন্ডল। আহতরা হলো- বাবলুর ছেলে আতিক (১৬), ইদ্রিসের ছেলে মমিনুল (১৭) ও আব্দুল গফুরের ছেলে সাজু (১৬)।
ঘটনাস্থল থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন।
তিনি জানান, দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শহরে তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় একটি মাচায় বসে এলাকার শিশুরা মোবাইলে গেম খেলছিল। সেখানে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। আর আহত হয় তিনজন। তাদেরকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
এদিকে চিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ সুখদেবপুর গ্রামে একটি পুকুরে দুপুরের পর মাছ ধরার সময় বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।
তারা হলেন, সাইমুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (২৮), মকসেদ আলীর ছেলে নুর ইসলাম (২৬) ও আলতাফ হোসেনের ছেলে আব্বাস আলী (২৫)।
তাদেরকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
চিরিরবন্দর থানা পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের দুগনুই গ্রামে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার বিকেল ৫টার সময় দুগনুই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে নৌকা দিয়ে কাইলানীর হাওরে তিনজন মাছ ধরতে গেলে বিকেলে হালকা বৃষ্টির সময় বজ্রপাত হলে নৌকায় থাকা তিনজনের মধ্যে দুজন পানিতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে তাদের স্বজন ও এলাকাবাসী খোঁজাখুঁজি করে তাদের লাশ উদ্ধার করে।
মৃতরা আপন চাচাতো ভাই এবং একই বাড়িতে বাস করতেন। তারা হলেন, ফজল মিয়ার ছেলে রাকিব মিয়া (১৬) ও মুকলিব আলীর ছেলে সাইদুর মিয়া (৩০)।
দুগনুই গ্রামের রুহুল আমীন তালুকদার রব মিয়া জানান, বজ্রপাতের সাথে সাথেই পানিতে পড়ে গিয়ে তারা নিখোঁজ হয়। সাথে থাকা সাইদুর মিয়ার কিশোরী মেয়ে ছোট্টমনি প্রাণে বেঁচে যায়। সে বাড়িতে এসে বিষয়টি জানালে বাড়ির লোকজন ও গ্রামবাসী মিলে হাওরের পানিতে অনেক খোঁজাখুঁজির পর সন্ধ্যায় মৃতদের লাশ উদ্ধার করে।
মধ্যনগর থানার ওসি নির্মল দেব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। শোক জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জম হোসেন রতন।
Leave a Reply