সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অলিম্পিকের ব্যাটন প্যারিসের হাতে তুলে দিল টোকিও। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ফ্রান্সের প্যারিসে আবারও বসবে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’খ্যাত অলিম্পিক গেমস। এতে ৫০টি ডিসিপ্লিনের ৩৩৯টি ইভেন্টে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১১ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদ অংশ নেবেন। তবে এ জন্য তাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে তিন বছর। করোনা ভাইরাসের কারণে এক বছর পিছিয়ে এবারের অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হয়েছে জাপানের টোকিওতে।
করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গেমস আয়োজনে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল স্বাগতিক জাপানের জন্য। সেই চ্যালেঞ্জ জয় করেছেন জাপানিজরা। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া বেশ সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে অলিম্পিক আসর। দুই সপ্তাহ ধরে টোকিও অলিম্পিকে পদক জয়ের জন্য লড়াই করেছেন ক্রীড়াবিদরা। পৃথিবীর ২০৫ দেশের খেলোয়াড়দের মিলনমেলায় পরিণত হয় টোকিও। হাসি-কান্না, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিতে মেতে ওঠেন তারা। তাদের দুই সপ্তাহের মহাক্রীড়াযজ্ঞের ইতি টানল গতকাল। উদ্বোধনীর মতো সমাপনী অনুষ্ঠানও হয়েছে দর্শকশূন্য টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে।
টোকিও অলিম্পিককে আগেই বিদায় বলে দেয় বাংলাদেশ। ১ আগস্ট টোকিও অলিম্পিক শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। করোনা মহামারীর এই সময়ে টোকিও অলিম্পিকে দেশের ছয় ক্রীড়াবিদ। এর মধ্যে কেবল আলোচনায় ছিলেন দুই আরচার রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। রোমান সানা এক রাউন্ড টপকালেও দিয়া সিদ্দিকী বিদায় নিয়েছেন প্রথম রাউন্ড থেকেই। এর আগে শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকী ভালো করতে পারেননি। তবে দুই সাঁতারু আরিফুল ইসলাম ও জুনাইনা আহমেদ নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছেন। দুজনই ক্যারিয়ারসেরা টাইমিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষে ২৯ বছর পর অ্যাথলেটিকসের ৪০০ মিটারে অংশ নিয়ে জহির রায়হানও নিজেকে ছাড়িয়ে যান। তিনি ক্যারিয়ারসেরা টাইমিং করেছেন। জহিরের দৌড় শেষ হওয়ার সঙ্গে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের অলিম্পিক মিশন। বাংলাদেশ বলে দেয়- ‘বিদায় টোকিও, দেখা হবে প্যারিসে।’
এবারের আসরে যথারীতি পদক তালিকায় শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ৩৯টি স্বর্ণ পদকসহ মোট ১১৩টি পদক জয় করেছে তারা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। ৩৮টি স্বর্ণসহ তারা পদক পেয়েছে মোট ৮৮টি। স্বাগতিক জাপান তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৮টি পদক জিতেছে। এর মধ্যে স্বর্ণপদক রয়েছে ২৭টি। নিজ দেশের ক্রীড়াবিদদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান থমাস বাখ সমাপনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, করোনা ভাইরাসের মধ্যে এই প্রথমবার পৃথিবী এক হয়েছে। নিজেদের আবেগ-অনুভূতি, হাসি-কান্না ভাগাভাগি করে নিয়েছেন খেলোয়াড়রা। ভবিষ্যতের জন্য প্রেরণা জুগিয়েছেন তারা। অলিম্পিক আয়োজন করে যে অর্জন তারা করেছেন, তা নিয়ে গর্ববোধ করতে পারেন জাপানিজরা। ক্রীড়াবিদদের পক্ষ থেকে জাপান ও টোকিওকে ধন্যবাদ জানান থমাস বাখ। অলিম্পিক আয়োজক কমিটির প্রেসিডেন্ট সেইকো হাসিমতো জানান, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন খেলোয়াড়রা। যেভাবে টোকিও অলিম্পিক আয়োজন করেছে, তা অলিম্পিক গেমসকে আরও গতিশীল করবে। এগিয়ে যাবে ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিকের দিকে।
Leave a Reply