1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে ডুবিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১

যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাত, পা ও মুখ বেঁধে নদীর পানিতে ডুবিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার ২৮ ঘণ্টার পর গতকাল শনিবার গভীর রাতে ভুক্তভোগী গৃহবধূ মাইফুল নেছা তাহিরপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় যৌতুকের জন্য নির্যাতন এবং হাত, পা ও মুখ বেঁধে নদীর পানিতে ডুবিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে।  এছাড়া মামলায় যে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- স্বামী আবু তাহের জান্নাত (২৮), শ্বশুর সাজিদ মিয়া (৬০), দুই দেবর জাকির হোসেন (২২) ও বাবুল মিয়া (২৫) এবং  ননাই টেন্টারপাড়া গ্রামের জান্নাতের মামা আলী হোসেন (৪০)।

জানা গেছে, তাহিরপুর উপজেলার বাদলারপাড় গ্রামের কারী নিজাম উদ্দিনের ছোট মেয়ে মাইফুল নেছার (২০) সঙ্গে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদ মিয়ার ছেলে আবু তাহের জান্নাতের (২৮) প্রেম ছিল। আট মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের জান্নাত শ্বশুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী ভোলাখালি গ্রামে ভাড়া বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করছিলেন। জান্নাতের আপন দুই ভাই জাকির হোসেন (২৫) ও বাবুল মিয়া (২২) এবং তার বাবা পোল্ট্রি মোরগের ব্যবসা শুরু করেন।

বিয়ের কিছুদিন পর মাইফুল নেছার স্বামী আবু তাহের জান্নাত যৌতুক দাবি করলে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস খানেক ধরে স্ত্রীকে আবারও মোটরসাইকেল কিনতে টাকার দেওয়ার জন্য চাপ দেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে স্ত্রী মাইফুল নেছা বাবার বাড়িতে চলে যান। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর পরিবারের লোকজনের পরিবারের দ্বন্দ্ব চলছিল। গণ্যমান্যদের নিয়ে ইতিমধ্যে পারিবারিক সালিসও হয়।

স্ত্রীর পরিবারের অভিযোগ, যৌতুক না পাওয়া ও দুই পরিবারের দ্বন্দ্বের জের ধরে গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মাইফুল নেছাকে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর ভাড়া বাড়িতে নেওয়ার কথা বলে স্বামী আবু তাহের জান্নাত, তার দুই ভাই ও বাবা মিলে মাইফুল নেছার হাত-পা ও মুখ বেঁধে বস্তায় ভরে ভাঙ্গার খালের পানিতে ফেলে হত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু মাইফুল নেছার গোঙানোর শব্দ ও প্রতিবেশীরা ঘটনাটি টের পেয়ে এগিয়ে আসলে সবাই দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এরপর মাইফুল নেছাকে উদ্ধার করে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য  কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে অভিযুক্ত স্বামী আবু তাহের জান্নাতের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বরটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। ঘটনার পরপরই তার পরিবারের সবাই ভাড়া বাড়ি ছেড়ে এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

আহত গৃহবধূর বড় ভাই মো. এবায়দুল্লাহ বলেন,‘ প্রেম করে আমার বোনকে বিয়ে করেছিল আবু তাহের জান্নাত। তবে বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী টাকার জন্য আমার বোনকে নির্যাতন করছিল। তার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ হাজার টাকা দিলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। মোটরসাইকেল কেনার জন্য আরও টাকা চায়। কিন্তু আমরা দিতে পারিনি। শুক্রবার রাতে আমার বোনের হাত, পা ও মুখ বেঁধে নদীতে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু মানুষ টের পাওয়ায় তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আমরা এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, ‘ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে তার স্বামী, শ্বশুর, দুই দেবর ও মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পরপরই আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com