1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৯ অপরাহ্ন

রংপুরে গরুর হাট থেকে অতিরিক্ত ২৫ কোটি টাকা আদায় ইজারাদারদের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রংপুর বিভাগের এক হাজার ৩৩৫টি কোরবানির পশুর হাট থেকে সাত দিনে ২৫ কোটি টাকারও বেশি অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন ইজারাদাররা। বিক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার নিয়ম না থাকলেও প্রতি গরু থেকে রশিদ ছাড়াই ২০০ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছেন হাট ইজারাদারা। আর মূল রশিদের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে দ্বিগুণ। এবার রংপুর বিভাগের পশুর হাটগুলোতে এ কারণে বড় গরুর কোনো কদর নেই। মাঝারি ও ছোট গরু বিক্রি হচ্ছে বেশি। তা ছাড়া কোরবানির হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, রংপুর বিভাগের আট জেলার ৫৮ উপজেলার এবার কোরবানির পশু বেচা-কেনার হাট বেসেছে এক হাজার ৩৩৫টি। কঠোর লকডাউনে কিছু কিছু হাট না বসলেও শিথিল হওয়ার পর নির্ধারিত হাট ছাড়াও আরো প্রায় ১০০টি অতিরিক্ত হাট বসেছে বিভাগে।

হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এবারে বড় গরুর বিক্রি খুব একটা নেই। করোনা মহামারীর কারণে হাতে টাকা না থাকায় অনেকেই ভাগাভাগি করে ছোট-মাঝারি গরু কোরবানির জন্য কিনছেন। এতে বড় খামারিরা বিপাকে পড়েছেন।

এদিকে রংপুর বিভাগে হু হু করে করোনার সংক্রম বাড়লেও শিথিল লকডাউনে হাটবাজারের পরিস্থিতি একেবারেই উল্টো। হুমড়ি খেয়ে মানুষ ভির করছেন হাটে। স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই।

মঙ্গলবার সকালে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জাকিরুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এই বিভাগে মারা গেছে ১৬ জন। আর সনাক্ত হয়েছে ৫৯২ জন। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৭৫৫ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৫২১ জন। সংক্রমণ ও মৃতের হার এখন ঊর্ধ্বমুখী বলেও জানিয়েছেন বিভাগী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

কিন্তু বিপরীতে দেখা গেছে, কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নেই পশুর হাটগুলোতে। শারীরিক দূরুত্ব ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের তো প্রশ্নই আসে না। সামান্য মাস্কও নেই বেশিরভাগ মানুষের মুখে।

অপর দিকে স্বাস্থ্যবিধির এমন অবস্থায়ও হাটগুলোতে ইজারাদাররা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন গরু বিক্রেতাদের থেকে। হাট ইজারারশর্ত অনুযায়ী, বিক্রেতার কাছে টাকা না নেয়ার নিয়ম থাকলেও এই বিভাগের হাটগুলোতে তা মানা হচ্ছে না। প্রতিটি গরু বিক্রি হলে আদায় করা হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। যার কোনো ভাউচার দেয়া হচ্ছে না। আর রশিদ মূলে টাকা নেয়া হচ্ছে নির্ধারিত দরের দ্বিগুণ। অতিরিক্ত চাঁদা নেয়ার কারণ বললেন, অনেক খরচ।

রংপুরের পদাগঞ্জ হাটের ইজারাদার আইয়ুব আলী জানান, তিনি ২০০ টাকা বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিচ্ছেন। সেটা দিয়ে হাট পরিষ্কার, মাস্ক, প্রশাসনসহ বিভিন্ন আনুসঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ করছেন। একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুরের বেশ কয়েকটি হাটের ইজারাদার। অনেকেই আবার বলেছেন, এত টাকার গরু যদি কিনতে পারে তাহলে তিনি টাকা দিবেন না কেন?

ইজারাদারদের অতিরিক্ত টাকা আদায়ে হতবাক উন্নয়ন গবেষকরা। অরগানাইজেশন অব রুরাল ডেভলোপমেন্ট-ওআরডি, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল জানান, করোনায় সবাই যখন মানবিক। তখন এভাবে সাত দিনের ব্যবধানে রংপুর বিভাগের হাটগুলো থেকে ২৫ কোটি টাকারও বেশি অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন ইজারাদাররা। যার কোনো রশিদ দিচ্ছেন না তারা। বিষয়টি হাটে ওপনে সিক্রেট। সেখানে প্রশাসনের লোকজন থাকলেও তারা কোনো ভ্রুক্ষেপ করছেন না। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়েই সেটি করা হচ্ছে। এ বিষয়টি কঠোরভাবে দমন করা উচিৎ।

এ ব্যপারে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভুঞা জানান, কোরবানির গরুর হাটে রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নিলে সেখানে আমরা সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া আছে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com