পাঁচ বছর আগে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত জঙ্গি শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বলকে স্মরণ করে আজও হাহাকার করেন তার বাবা-মা। বগুড়ায় ধুনট উপজেলার বাসিন্দা উজ্জ্বল ছিল পরিবারের সবার ছোট। ২০০৫ সালে স্থানীয় গোসাইবাড়ি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০০৭ সালে গোঁসাইবাড়ি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ২০১১ সালে একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন তিনি। পরে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হন উজ্জ্বল।
জানা গেছে, হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পাঁচ বছর পূর্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদে উজ্জ্বলের ছবি দেখে মূর্ছা যান তার মা আছিয়া বেগম। তারা বর্তমানে উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর পাড়ের গ্রাম চল্লিশ পাড়ায় বসবাস করেন।
আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিন নিহত উজ্জ্বলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার পরিবারের সবাই চুপচাপ। কারও মুখে কথা নেই। উজ্জ্বলের মা-বাবা ছেলের স্মৃতিচারণ করছেন। তাদের চোখমুখে কষ্টের ছাপ।
উজ্জ্বলের বাবা বদিউজ্জামান জানান, প্রতি বছর এই দিনটি আসলে তার ছেলের কথা মনে পড়ে। ছেলে কীভাবে জঙ্গি হয়েছিল তা কখনও বুঝতে পারেননি তিনি। তবে এসব কাজে কারও যাওয়া ঠিক না। তিনি বলেন, ছেলে তো তাই মন কাঁদে। লাশ পেলে কবর দিয়ে অন্তত তা জিয়ারত করতে পারতাম।
উজ্জ্বলের মা আছিয়া বেগম বলেন, অনেক কষ্টে ছোলটাক লেকাপড়া শিকাইছো, তাবলীগ জামায়াতর চিল্লায় গিয়ে জঙ্গি হবে তা তো ভাবিনি।
উজ্জ্বলের বাবার আগের বাড়ি ছিল বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের কচুগাড়ি গ্রামে। যমুনার ভাঙনে বাড়ি নদীগর্ভে বাড়ি বিলীন হয়ে তারা চল্লিশপাড়ায় নতুন বাড়ি করেন। বদিউজ্জামান একজন কৃষক। তার তিন ছেলে। সবার ছোট ছিলেন শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে কূটনীতিক পাড়া গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। হামলায় অংশ নেওয়া জেএমবির পাঁচ জঙ্গি ওই অভিযানে নিহত হয়। তাদের মধ্যে একজন শফিকুল ইসলাম উজ্জল।
Leave a Reply