করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আজ সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে লকডাউন শুরু হয়েছে। প্রথম তিনদিন কিছুটা শিথিল থাকলেও আগামী বৃহস্পতিবার থেকে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে। সাত দিনব্যাপী এ লকডাউনে এবার মুভমেন্ট পাস থাকবে না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
আজ সোমবার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা আসবে। এবার লকডাউনে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না। এর আগের লকডাউনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে বাইরে বের হওয়ার নিয়ম থাকলেও ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া লকডাউন কোনো মুভমেন্ট পাস থাকবে না।’
এদিকে, ১ জুলাই থেকে পরবর্তী সাত দিন দেশব্যাপী চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকরে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ ব্যাপারে বলেন, আগামী ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ থাকবে। তবে প্রয়োজন মনে হলে তা আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে। এ সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। দেশের করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা কঠোরভাবে বিধিনিষেধ কার্যকর করব। এই সময়ে জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। বিধি-নিষেধ কার্যকরে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে।’
গতকাল রোববার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সাত দিনব্যাপী লকডাউন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় কিছু শর্তাবলী সংযুক্ত করে আজ সোমবার (২৮ জুন) সকাল ৬টা থেকে থেকে আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।
এ নিষেধাজ্ঞায় রিকশা ব্যতীত অন্যান্য সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। চলবে শুধু পণ্যবাহী যান। শপিংমল-মার্কেট, বিনোদনকেন্দ্র, রিসোর্ট, সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে। এতদিন বিধিনিষেধের মধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে মুভমেন্ট পাস নিয়ে কড়াকড়ি ছাড়া তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এবার যে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে, তাতে কোনো শিথিলতা দেখাবে না পুলিশ।
লকডাউনের সরকার কর্তৃক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সারাদেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ব্যতীত সকল গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিত টহলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করবে। সকল শপিং মল, মার্কেট, দোকানপাট, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার এবং সব ধরনের বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেলে রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮ট পর্যান্ত খোলা থাকবে। এসব হোটেল-রেস্তোরাঁ শুধুমাত্র খাবার বিক্রয় করতে পারবে। হোটেল রেস্তোঁরায় বসে কেউ খেতে পারবেন না। সরকারি-বেসরকারি সকল অফিস ও প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সংখ্যক উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লোকজন আনা-নেওয়া করবে।
Leave a Reply