চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পাঁচ বছরে একদিন নিজের অফিসে হাজির হয়েছিলেন জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জেহাদ। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তবে এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করেছেন চেয়ারম্যান জাহিদুল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত পড়ে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। গ্রাম আদালত ও তথ্যকেন্দ্র না থাকায় সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত ইউনিয়নবাসী। নাগরিক পরিচয়পত্র, জন্ম-মৃত্যু সনদ ও ত্রাণ পেতে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৬ সালে মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাহিদুল ইসলাম জেহাদ। পৈতৃক সূত্রে তিনি মেরুরচর ইউনিয়নের মাদারের চর এলাকার বাসিন্দা হলেও তার পরিবার স্থায়ীভাবে শেরপুরে বসবাস করেন। ২০১৬ সালে নৌকার মনোনয়ন নিয়ে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর একদিন মিটিং হয়েছিল ইউনিয়ন পরিষদে। পরে ইউনিয়ন পরিষদে আর কখনো দেখা মেলেনি চেয়ারম্যানের।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, চেয়ারম্যানের সকল কার্যক্রম চলে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের নিজ বাসায়। যেকোনো কাজের জন্য সাধারণ মানুষকে ৭/৮ কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরে আসতে হয়। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু থাকলেও মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদে তথ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ। তথ্যসেবার কার্যক্রমও চলে বকশীগঞ্জে। যে কারণে একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ বা পরিচয়পত্র নিতে হলেও মানুষকে আসতে হয় বকশীগঞ্জে। দিনের পর দিন ঘুরেও দেখা মেলে না চেয়ারম্যানের। ভিজিডি, ভিজিএফসহ সব ধরনের ভাতাভোগীদের আসতে হয় বকশীগঞ্জ কিংবা জব্বারগঞ্জ বাজারে। ফলে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার জনগণ। চেয়ারম্যান পরিষদে না যাওয়ায় পরিষদের রুমে ধান, গম ও পাট রাখেন স্থানীয়রা। এছাড়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছেন চার নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছামিউল হক নেদা।
ইউপি সদস্য ছামিউল হক নেদা বলেন, ‘গত পাচঁ বছরে পরিষদে মাত্র একদিন মিটিং হয়েছিল। এছাড়া একবারের জন্যও চেয়ারম্যান পরিষদে আসেননি। সকল কার্যক্রম চলে বকশীগঞ্জ পৌর শহরে তার বাসায়। সরকারি সকল বরাদ্ধ বিতরণ করা হয় জব্বারগঞ্জ বাজার থেকে।
এ ব্যাপারে মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিহাদুল ইসলাম জেহাদ বলেন, ‘আমি সপ্তাহে দুইদিন অফিস করি। বাকি দিন বাসায় কার্যক্রম চালাই। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।’
Leave a Reply