সম্রাট
দেশীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক আমার বাবা- এই প্রাপ্তি আমাকে গর্বিত করে। পর্দার অনেক বড় নায়ক ছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন নায়করাজ উপাধি। নায়করাজের ছোট ছেলে আমি ভাবতে ভালো লাগে। আবার কষ্ট লাগে তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার আদর্শ জড়িয়ে আছে আমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসে-বিশ্বাসে আর প্রাত্যহিক কাজকর্মে। বাবা জীবনে যে সংগ্রাম করেছেন, কষ্ট করেছেন, পরিশ্রম করেছেন, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি আমাদের পুরো পরিবারকে যতেœর সঙ্গে ভালোবাসার সঙ্গে একই সুতায় বেঁধে রেখেছিলেন, তা আমাদের কাছে বড় একটা শিক্ষণীয় বিষয়। শত ব্যস্ততার মাঝেও বাবা আমাদের প্রচুর সময় দিয়েছেন।
মেহজাবিন
বিশ্বের বর্তমান যে পরিস্থিতি, এতে আসলে বাবার কাছে একটিই চাওয়া তিনি যেন নিজের যতœটা নিজেই যেন নেন। সব রকমের হতাশা থেকে যেন দূরে থাকেন। বিশ্বে এই মুহূর্তে যত সমস্যা, তা নিয়ে যেন খুব বেশি দুশ্চিন্তা না করেন। প্রত্যেক সন্তানের চোখেই বাবা সুপার হিরো, আমার চোখেও আমার বাবা একজন সুপার হিরো। কারণ এমন কিছু নেই, যা বাবা আমাদের জন্য করেননি। সবচেয়ে বড় কথা, আমার বাবা তার প্রত্যেক সন্তানের ওপর আস্থা রেখেছেন। আমার বাবা সব সময়ই এটা বলেন, আমরা যে কাজই করি না কেন, সেটায় যেন আমরা শীর্ষে যেতে পারি। পড়াশোনার ব্যাপারে তিনি স্বাধীনতা দিয়েছেন। তবে ভালো ফলটা চেয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে বাবা এবং মায়ের কাছে একটিই চাওয়া- তারা দুজনই যেন ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন।
অপূর্ব
আমার বাবা একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই আমি আমার বাবার আদর্শে বেড়ে উঠেছি, বড় হয়েছি। বাবার আদর্শের সবচেয়ে যে বিষয়টি আমি আমার নিজের মধ্যে লালন করি তা হলো, বাবা সব সময়ই সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে একই সুতোয় গেঁথে থাকতে ভালোবাসতেন। একসঙ্গে থাকার মধ্যে সব সময়ই তার মধ্যে ভীষণ ভালো লাগা কাজ করত। সবার সঙ্গে সবার সব সময় দেখা হয়, কথা হয় এটাই বাবাকে ভীষণ আনন্দ দিত। আমিও ঠিক তাই পছন্দ করি। পারিবারিক যে বন্ধন, সেটাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমার বাবা আমাকে ছোটবেলায় অপু বলে ডাকতেন, এখনো তাই ডাকেন।
কনা
ছোটবেলা থেকেই আব্বুর সঙ্গে সম্পর্কটা আমাদের দূরত্বের নয় বন্ধুত্বের। ছোটবেলা থেকেই আব্বুর সঙ্গে সব কিছুই শেয়ার করতাম। মগবাজার গার্লস স্কুলে পড়ার সময় আমি আর আমার বড় বোন একই রিকশায় আব্বুর সঙ্গে যেতাম। আমি আব্বুর কোলে বসতাম, আর আপু পাশে। আমি আরেকটু বড় হওয়ার পর আমি ওপরে বসতাম। একসময় একসঙ্গে আর স্কুলে যাওয়া হয়ে উঠত না। এই বড়বেলায় এসে ছোটবেলার সেই আব্বু, আমি আর আপুর একই রিকশায় করে স্কুলে যাওয়ার দিনগুলো খুব মিস করি। কনা নামটি আমার খালুর রাখা। স্বাভাবিকভাবেই একজন সন্তান, বিশেষত মেয়েরা তার মায়ের অনেক গুণাবলিই পেয়ে থাকে। কিন্তু আমি আমার বাবার সততা এবং ক্ষমা করে দেওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে পেয়েছি।
বিদ্যা সিনহা মিম
যেহেতু আমার বাবা শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন, তাই বিভিন্ন সময়ে যখন বাবার কর্মক্ষেত্রে আমি গিয়েছি, নিজ চোখে দেখেছি বাবাকে সবাই কত সম্মান করেন, ভালোবাসেন। আবার সেই বাবাই যখন আমার সঙ্গে এখন কোথাও যান, তখন তিনি নিজ চোখে উপভোগ করেন সেই বাবারই মেয়েকে দর্শক কতটা ভালোবাসছেন, শ্রদ্ধা করছেন। বাবার বুক তখন আনন্দে ভরে যায়। আমারও চোখে তখন জল চলে আসে। নিশ্চয়ই এটা অনেক ভালো লাগার যে বাবার আনন্দ হওয়ার মতো, গর্ব করার মতো জীবনে কিছু একটা করতে পেরেছি। অভিনয়ে দিয়ে দর্শকের মন জয় করা খুব সহজ কোনো কথা নয়। সেই কঠিন কাজটিই যখন করতে পেরেছি, তখনই আমাকে নিয়ে বাবার আনন্দ হয় বেশি। বাবা আমাকে ছোটবেলায় টুকটুকি বলে ডাকতেন। আবার একটু বড় হওয়ার পর বাবা আমাকে বাবু বলে ডাকা শুরু করেন। এখনো আমাকে বাবা বাবু বলেই ডাকেন।
হাবিব
সংগীতের প্রতি অনুরাগ বাবার কাছ থেকেই সৃষ্টি। সেই ছোটবেলা থেকেই বাবার দেখাদেখি গান গাওয়ার চেষ্টা করতাম। বাবা সব সময় আমার জীবনের আইডল; তাকে যত দেখি ততই যেন মুগ্ধ হই। আমার ইচ্ছের দাম দিয়েছেন বাবা সব সময়। যেখানে কঠোর হওয়া দরকার, সেখানে কঠোর হয়েছেন, শাসন আর আদর করেছেন সমানভাবে। পাশাপাশি তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক বন্ধুর মতো। বাপ-ছেলের খুনসুটি প্রায় হয়ে থাকে।
Leave a Reply